ঠান্ডায় জবুথবু হওয়া কাকে বলে, তা বোধ হয় সবচেয়ে ভাল জানেন এই শহরের বাসিন্দারাই। বছরের ২৮০ দিনই যে বরফ পড়ে এখানে। জানুয়ারির শেষ দিকে খানিকটা হলেও রোদের আভাস মেলে। পৃথিবীর অন্যতম শীতল এই শহর। রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ১৮০০ মাইল দূরে অবস্থিত নোরিলস্ক নামে এই শহরটি। বছরে নয় মাসই এখানে বরফ পড়ে।
বিমান বা জাহাজ ছাড়া আর কোনওভাবেই এই শহরে এসে পৌঁছনো সম্ভব হয় না। মোটামুটিভাবে হিমাঙ্কের চেয়ে ৬২ ডিগ্রি নিচেই থাকে তাপমাত্রা। নোরিলস্ক সুমেরু বৃত্তে (আর্কটিক সার্কেল) অবস্থিত একটি শহর। ১৯৩৫ সাল নাগাদ এই শহরের পত্তন হয়। প্রায় এক লক্ষ সত্তর হাজার জন বাসিন্দা রয়েছেন এই শহরে।
গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা থাকে প্রায় ১৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। রাশিয়ার অন্যতম বড় শিল্প শহর এটি।
শহরটি পারমাফ্রস্টের উপরেই তৈরি। সারা বছর পুরু কঠিন বরফের আস্তরণে আবৃত মাটিকেই বলা হয় পারমাফ্রস্ট।
বছরে প্রায় ২০০ পর্যটক আসেন এই শহরে বেড়াতে। বরফে মোড়া প্রকৃতিকে দেখতে। ইয়েনেসেই নদী, লেক ভিভি-সহ গোটা তুন্দ্রা এলাকাকে দেখতে। শহরের প্রতিটি বাড়ির দেওয়াল ‘অ্যান্টি-উইন্ড’। অর্থাৎ মারাত্মক ঠান্ডা হাওয়ার কাঁপুনি থেকে বাঁচাতে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে দেওয়ালগুলি।
রাশিয়ার আর পাঁচটা শহরের মতো অসংখ্য সংগ্রহশালা রয়েছে এই শহরে। রয়েছে গির্জা, প্রেক্ষাগৃহ, পানশালা ও ক্যাফে। তবে এই শহর আরও একটা কারণে সংবাদের শিরোনামে এসেছে বারবার।
এত ঠান্ডা হলেও এই শহর নিকেল, প্ল্যাটিনাম, প্যালাডিয়ামে সমৃদ্ধ। তাই কর্মসংস্থানও প্রচুর। তবে খনি শহর হওয়ায় এই শহরে ভয়ানক দূষণও রয়েছে। এই শহরে ইন্টারনেটের গতি অসম্ভব কম। ইনস্টাগ্রামে লাইভ ভিডিয়ো করা সবচেয়ে কঠিন কাজ, সংবাদ সংস্থাকে জানান এক স্থানীয় বাসিন্দা।