আগামীকাল রবিবার, বৌদ্ধদের জন্য দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যময়। মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিজ্ঞান লাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ—এই তিনটি ঘটনা এই দিবসে সংঘটিত হয়েছিল।
বিশ্বে বসবাসরত গৌতম বুদ্ধের অনুসারীরা এ দিনটিকে ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’ হিসেবে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর মর্যাদায় পালন করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে রাজা শুদ্ধোধন ও রানী মায়াদেবীর কোল আলো করে জন্ম নেন গৌতম বুদ্ধ। রাজা শুদ্ধোধন নবজাতক কুমারের নাম রাখেন সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থের জন্মের এক সপ্তাহ পরে তার মা মায়াদেবী পরলোকগমন করেন এবং তার লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন মাসি তথা বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমী। এ জন্য সিদ্ধার্থের নাম হয় গৌতম।
সর্ববিদ্যায় পারদর্শী হওয়ার পর কুমার সিদ্ধার্থকে সংসার বিষয়ে উদাসীন ও অধিক চিন্তাশীল দেখে রাজা শুদ্ধোধন প্রতিবেশী কোলিয় (কারো কারো মতে শাক্য) গণতন্ত্রের রাজকন্যা যশোধরার (বা গোপাদেবী) সঙ্গে তার বিয়ে দেন। কিন্তু গৌতম ছিলেন সংসারে উদাসীন।
তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় কাতর হতেন। বৃদ্ধ, রোগী, মৃতদেহ ও সন্ন্যাসী_ এ চার দৃশ্য দেখে সংসারের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েন। সংসারের মায়াজাল পারমার্থিক কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে বুঝতে পেরে, আত্মসন্ধানের নিমিত্ত তপস্যার জন্য পুত্রের জন্মের সপ্তম দিবসে আষাঢ়ের পূর্ণিমা তিথিতে তার রথের চালক ছন্দককে সঙ্গে নিয়ে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করেন। কোনো দিন তিনি সংসারে ফিরে আসেননি।
বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিবসটি উৎসবমূখর এবং ভাবগাম্ভীর পরিবেশে উদযাপনের জন্য দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে সকাল ১০টায় বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান এবং সন্ধ্যে ৬টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আগামীকাল সরকারি ছুটির দিন। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।