ডিএমপি নিউজঃ পবিত্র মাহে রমজান মাসে ভেজাল মুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে ও খাবারে যেকোন ভেজাল প্রতিরোধ করতে কাজ করবে মোবাইল কোর্ট। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তত্ত্বাবধানে সক্রিয় থাকবে এই মোবাইল কোর্ট। মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিশেষ সমন্বয় সভায় একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম(বার), পিপিএম।
ডিএমপি কমিশনারের সভাপতিত্বে ১৪ মে’১৮ বিকাল সাড়ে ৩ টায় ডিএমপি সদর দপ্তরে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়।
পবিত্র রমজানে জনসাধারণ যাতে নিরাপদে ইফতারের আগে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সে লক্ষ্যে ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। এর মধ্যে রয়েছে সুষ্ঠুভাবে ইন্টারসেকশন ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়ন করা, নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং, শপিং মলের সামনে বা আশপাশে যানবাহন পার্কিং বন্ধ রাখা, ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা, ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং না করা এবং মোটরসাইকেল চলতে না পারে সে ব্যবস্থা করা, ইন্টারসেকশনের সামনে কোন গাড়ি জটলা না করে সে দিকে লক্ষ্য রাখা, রিক্সা-ভ্যান-ঠেলাগাড়ি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় উঠতে না দেয়া, পিক আওয়ারে উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার রাস্তায় থেকে যানজট নিয়ন্ত্রন করা, ঈদের আগে প্রতিটি গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা।
এছাড়াও মহানগরীর সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও রেল স্টেশনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন, সড়ক দূর্ঘটনা রোধে বাস মালিক সমিতির নেতাদের সাথে সমন্বয় করে ড্রাইভারের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে গাড়ি টার্মিনাল থেকে বাহিরে বের করা প্রভৃতি।
তিনি বলেন- রাত্রিবেলায় অবশ্যই বাসের সকল যাত্রীদের ভিডিও চিত্র ধারণ করে বাস টার্মিনাল হতে বের করতে হবে। লক্কর-ঝক্কর গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না। বাস মালিক সমিতি ও পুলিশের সমন্বয়ে টিকিট কালোবাজারীদের প্রতিরোধ করতে হবে। টার্মিনালের প্রবেশ ও বাহির পথ যানজটমুক্ত রাখতে হবে। টার্মিনাল কেন্দ্রিক পর্যাপ্ত সংখ্যক কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কি করতে হবে। যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী না উঠানোর জন্য বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধিদেরকে বলেন ডিএমপি কমিশনার।
রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবাদানকারী সংস্থাকে নতুন করে কোন রাস্তা না খুঁড়তে ও পুরাতন খুঁড়া রাস্তা দ্রুত মেরামত করার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার। এছাড়াও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ফুটপাত ও বাড়ীর সামনের রাস্তা দখল করে নির্মাণ সামগ্রী যারা ফেলে রেখে চলাচলে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন- ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অজ্ঞান ও মলম পার্টির প্রতিরোধে রমজান ও ঈদে মোতায়েন থাকবে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশের বিশেষ টিম। বিভিন্ন মার্কেট শপিং মলে পুলিশ নিরাপত্তা দিবে। পাশাপাশি মার্কেটের নিরাপত্তার জন্য মার্কেট মালিক সমিতিকে সিসিটিভি, আর্চওয়ে, নিজস্ব সিকিউরিটি, এক্সেস কন্ট্রোল মেশিনসহ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রমজানে ভেজাল খাবার প্রতিরোধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্টের টাকাসহ মোটা অংকের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশের মানি এস্কর্ট সেবা নিতে সকল ব্যবসায়ীর প্রতি আহবান জানান কমিশনার। পুলিশের এস্কর্ট ছাড়া মোটা অংকের টাকা এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিতে নিষেধ করেন এবং প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা সনাক্তকারী মেশিন রেখে সন্দেহজনক টাকা পরীক্ষা করতে বলেন তিনি।
উক্ত সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা, দোকান মালিক সমিতি, বাস-মালিক সমিতি, লঞ্চ মালিক সমিতি, বিজিএমইএ বিকেএমইএ, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।