ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীতে বাসের ভেতর ইভটিজিং ও মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে মারামারি ও হত্যার ঘটনায় ০৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের শেরেবাংলানগর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) রাজধানীর হাজারীবাগ, লালবাগ, মোহাম্মদপুর ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ফারুক (১৯), জিতু (১৮), জসিম (১৯), মোস্তফা (১৯), জোবায়ের ওরফে যুবরাজ ওরফে জয় (১৮),মোঃ রাব্বি (১৯) ও মোঃ রোমান (১৫)।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) বেলা ১১:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) তারিখে রাজধানীর হাজারীবাগের টিকটকার শান্ত ধামরাইয়ের মোহাম্মদিয়া রিসোর্টে একটি পুল পার্টির আয়োজন করে। এ আয়োজনে হাজারীবাগ ও আশেপাশের এলাকার প্রায় শতাধিক তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করে। তাদের এ আয়োজন ছিলো এই মৌসুমের শেষ টিকটকারস্ পুল পার্টি। পুল পার্টি থেকে ফেরার পথে বাসের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে গাঁজা খাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি একজন সিনিয়রের গার্লফ্রেন্ডকে ইভটিজিংয়ের দিকে গড়ায়। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে কথা বলে সুরাহা করে নেয়া হলেও উভয়পক্ষই মূলত আরো মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। বাসটি হাজারীবাগ যাবার পথে আসাদ গেটে এসে পৌঁছালে গার্লফ্রেন্ডদের বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে উভয় পক্ষই একে অপরের সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ সময় সিনিয়র গ্রুপের মোঃ রাব্বী ওরফে রাফা (২৪) তার কাছে থাকা সুইচ গিয়ার ছুরি দিয়ে জুনিয়র গ্রুপকে আঘাত করতে যায়। জুনিয়র গ্রুপের সদস্যরা একত্রিত হয়ে রাফার কাছ থেকে সুইচ গিয়ার ছুরি কেড়ে নিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করে। এছাড়াও, শাওন (১৯) নামের অপর একজনও এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাব্বীকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (০২ নভেম্বর, ২০২২ খ্রি.) রাত ১ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো বলেন, শেরেবাংলানগর থানা পুলিশ খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থলে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঐদিন মধ্য রাতের পর থেকে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানকালে রাজধানীর হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকা হতে একে একে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের। এ সময় মূল অভিযুক্ত ফারুকের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদি হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, পুলিশের কাছে তারা ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। পুল পার্টি থেকে ফেরার পথে বাসে থাকা গার্লফ্রেন্ড গাঁজা ও সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে না পেরে বয়ফ্রেন্ডের কাছে অভিযোগ ও ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার নির্মম পরিণতি এই হত্যাকাণ্ড। অভিযুক্তদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত ফারুকের নামে হাজারীবাগ থানায় তিনটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যান্য অভিযুক্তরাও বয়সে তরুণ, তারা কেউ ছাত্র, কেউ কারখানার কর্মচারী।