ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর সবুজবাগে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সবুজবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- এসি মেকার বাপ্পী, সুমন হোসেন হৃদয় ও রুবেল। এসময় তাদের হেফাজত থেকে লুন্ঠিত মালামালের মধ্যে ২ টি স্বর্ণের চেইন ও ০১ জোড়া কানের দুল উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ ২০২২) বেলা ০৫:০০ টায় ডিএমপির পল্টন মডেল থানার কনফারেন্স রুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল) মোঃ আঃ আহাদ, পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, ভিকটিম ও তার স্বামী জনৈক ময়নুল ইসলাম, দুটি শিশু সন্তান সহ সবুজবাগ থানার বেগুনবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ভিকটিমের স্বামী একটি সরকারি হাসপাতালের টেকনোলোজিস্ট পদে কর্মরত। পূর্বে তার পোস্টিং ঢাকায় হলেও ঘটনার কিছু দিন আগে তার একটি জেলায় পোস্টিং হয়। গত ২২ মার্চ ২০২২ ভিকটিমের স্বামী তার বর্তমান কর্মস্থলে চলে যান। গত ২৬ মার্চ ২০২২ বিকালে পূর্ব পরিচিত এসি মেকার বাপ্পী ও তার সহকর্মী সুমন হোসেন হৃদয়ের সঙ্গে বাসার নিচে ভিকটিমের দেখা হয়। এসি সার্ভিসিং করা লাগবে কিনা জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে সার্ভিসিং করানোর জন্য এসি মেকার বাপ্পী ও সহযোগী সুমন হোসেন হৃদয়কে নিয়ে দোতলায় তার বাসায় যান।
দুজন এসি খুলে সার্ভিসিং এর কাজ শুরু করে। প্রায় আধা ঘন্টা পরে জিআই ক্যাবল আনতে গ্রেফতারকৃত বাপ্পী নিচে যায় এবং ক্যাবল নিয়ে বাসায় আসে। বাপ্পী ফেরার ০৫/০৬ মিনিটের মধ্যে তাদের অন্য সহযোগী গ্রেফতারকৃত রুবেল বাসায় প্রবেশ করে। ভিকটিম তার পরিচয় জানতে চাইলে গ্রেফতারকৃত এসি মেকার বাপ্পী জানায় সেও এসির কাজ করতে এসেছে। এরপর ভিকটিম তাকে চেয়ারে বসতে দেন। ভিকটিম তার ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেন। একসময় ভিকটিম রুমে ঢুকে গ্রেফতারকৃত এসি মেকার বাপ্পী ও রুবেলকে দেখেন যে তারা রুমে থাকা আলমারি খুলে জিনিসপত্র এলোমেলো করছে। তখন তিনি চিৎকার দেন এবং গ্রেফতারকৃত রুবেল সাথে সাথে ভিকটিমকে বালিশ দিয়ে চেপে ধরে এবং বাপ্পী তার ব্যাগে থাকা চাপাতি বের করে মাথা ও পিঠে সর্বমোট তিনটি কোপ মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঐসময় শিশু বাচ্চারা কেঁদে উঠলে গ্রেফতারকৃতরা তাদের সাথে আনা কসটেপ দিয়ে শিশুদের মুখ এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে বেধে রাখে। এরপর গ্রেফতারকৃতরা ঘরের আলমারীতে থাকা স্বর্ণালংকার, ভিকটিমের কানে থাকা দুল, বাচ্চাদের মধ্যে একজনের গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন, নগদ টাকা পয়সা ও ভিকটিমের মোবাইল সেট নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী জনৈক ময়নুল ইসলাম সবুজবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৮ মার্চ ২০২২ ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানা এলাকা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে এসি মেকার বাপ্পীকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ দুপুরে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমন হোসেন হৃদয় ও রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়।
ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত এসি মেকার বাপ্পিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ আদালত ০৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলেও জানান তিনি।