দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৃহৎ স্থানীয় বাজারের সুবিধা থাকায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীনের কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী এক চীনা শিল্পপতি বলছিলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশি স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার থাকায় চীনের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পছন্দ করছে।’
তিনি গাজীপুরে অবস্থিত সম্পূর্ণ চাইনিজ মালিকানাধীন পান্ডা সুজ নামক একটি জুতা তৈরি কারখানার অন্যতম স্বত্ত্বাধিকারী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই কারখানাটি বছরে তিন লাখ জুতা উৎপাদন করছে, যেখানে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় কর্মচারী রয়েছে। ‘এখানে সস্তা শ্রমিক একটি বিষয়, তবে এটাই বিনিয়োগের মূল কথা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানত দু’টি কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছি, যার একটি হচ্ছে দু’টি দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং অপরটি হচ্ছে বাংলাদেশে ব্যাপক স্থানীয় বাজার রয়েছে।’
তিনি জানান, তার কোম্পানি গত চার বছর আগে এই কারখানা তৈরিতে ১ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে কারখানার নতুন একটি ইউনিটের নির্মাণকাজ চলছে। এর নির্মাণ শেষ হলে উৎপাদন দ্বিগুণ হবে এবং স্থানীয়দের আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এই চাইনিজ উদ্যোক্তা বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রচুর এবং ক্রমান্বয়ে দেশটির অর্থনীতির উন্নতি হওয়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের কাছে কম দামে গুণগত মানসম্পন্ন জুতা সরবরাহ করা। বাংলাদেশের সব মানুষ যেন ওইসব ভাল জুতা পরতে পারে আমি সেই স্বপ্ন দেখি।’ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বাজারে কম দামে মাত্র পাঁচশ’ টাকার মধ্যে গুণগতমানের জুতা সরবরাহ করার পরিকল্পনার কথাও জানান পান্ডা সুজ-এর এই স্বত্ত্বাধিকারী। বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে কাইচুনলেই ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ২০ বছরের কম সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ আজকের চীনের মতো অবস্থায় পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, ‘এমনকি ৩০ বছর আগেও বাংলাদেশ এখন যে পর্যায়ে আছে, চীন তাই ছিল। আমি মনে করি বাংলাদেশ মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই উন্নত দেশে পরিণত হবে।’-বাসস