ডিএমপি নিউজ : আজ রাত ১২টা পেরোলেই বাঙালি জাতির রক্তে রাঙানো অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা। তাঁদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা বাংলা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিলো, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও যথাযথ মর্যাদায় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপরই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও কূটনীতিকরা শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরপরই শহিদ মিনার সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এছাড়াও, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-বার, পিপিএম শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন।
সাধারণ জনগণ পলাশী মোড় ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে এসে শহীদ মিনারে প্রবেশ করে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন। অন্য কোনো পথে শহীদ মিনারে প্রবেশ করলে বাধার সম্মুখীন হবেন। ফুলে শ্রদ্ধা জানানোর পর দোয়েল চত্বর ও চাঁনখারপুল দিয়ে বের হয়ে চলে যাবেন।
গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সমগ্র এলাকা কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রয়েছে।
আগামীকাল সরকারি ছুটির দিন। অর্ধনমিত রাখা হবে জাতীয় পতাকা। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হবে শোকের কালো পতাকা। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বেতারে ভাষা দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্র ও অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে। মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্ব তাকে বরণ করেছে সুগভীর শ্রদ্ধায়। ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতির ইতিহাস যতদিন এই পৃথিবীতে সমুন্নত থাকবে ততদিন বাঙালি জাতি এই মহান ভাষা সৈনিকদের বিনম্রচিত্তে স্মরণ করবে ‘‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’’।