উত্তর কোরিয়ায় লাগামহীন পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার হুমকি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি কার্ল ভিনসন রণতরী পাঠিয়েছে দেশটির জলসীমার কাছে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলছে হামলা-পাল্টা হামলার হুমকি-ধমকি। যে কোনো সময় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে দুই দেশ এবং এর ফলে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে চীন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। এ পরীক্ষা ব্যর্থ হলেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। গতকাল সোমবার যৌথ সামরিক বিমান মহড়া চালিয়েছে দেশ দুটি। দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হয়াং কাইও আনের সঙ্গে বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছেন, উত্তর কোরিয়াকে সহ্য করার সময় শেষ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিন হং চোল আলজাজিরকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, খোলাচোখে বিশ্বের দিকে তাকানো। একনায়কগিরির দিন আর নেই। উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী ‘সর্বোচ্চ সতর্ক’ অবস্থায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটনের ধমকিতে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। পিয়ংইয়ং তার পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসে অর্থাৎ বছরজুড়েই পরমাণু বোমাবাহী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করবে উত্তর কোরিয়া।
এদিকে হয়াং কাইও জানান, দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ বা থাড ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নির্ধারিত সময়ে আগেই সম্পন্ন করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। শুরু থেকেই কোরীয় অঞ্চলে এ ব্যবস্থা স্থাপনের বিরুদ্ধে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাকমাস্টার দাবি করেন, হোয়াইট হাউসে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সব ধরনের পদক্ষেপের কথাই ভাবা হচ্ছে। ওদিকে মাইক পেন্সের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা আমরা গ্রহণযোগ্য মনে করি না। এটা জাতিসংঘের প্রস্তাবের লঙ্ঘন।
এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন ভাঙতে পারে না। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়ার মতো উত্তর কোরিয়াতেও যুক্তরাষ্ট্র একতরফা হামলা চালাবে না। এদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আবারও এ ধরনের উস্কানিমূলক পরীক্ষা না চালাতে হুঁশিয়ার করেছেন উত্তর কোরিয়াকে।