ডিএমপি নিউজঃ রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে যানজট মুক্ত নগরী গড়তে পুলিশের সাথে গাড়ির মালিক-শ্রমিকদের একত্রে কাজ করতে হবে। পুলিশের একার পক্ষে রাস্তার যানজট নিরসন করা সম্ভব নয়। সকলের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে যানজট মুক্ত ঢাকা গড়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম বিপিএম।
আজ ১৫ মে, ২০১৮ তারিখ রাজধানীর মহানগর নাট্য মঞ্চে পরিবহন মালিক এবং চালকগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধকল্পে আয়োজিত যৌথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটি বলেন তিনি।
ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের আয়োজনে উক্ত যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সহযোগিতা করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, ঢাকা জেলা সড়ক পরিবহন যানবাহন ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
পরিবহন খাতের প্রতিনিধিদের সাথে এমন একটি সভা আয়োজন করায় সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক বলেন, পরিবহন খাত শুধু ব্যবসা নয়, এটা জনসেবামূলক একটি মহৎ কাজ। আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ঈদে লাখ-লাখ মানুষ নাড়ির টানে ঘরে ফেরে। পুলিশের মতই আপনারা বছরের ৩৬৫ দিন দেশের মানুষের জন্য কাজ করে থাকেন। জনহয়রানি করা পুলিশের কাজ না। তবে আইন অমান্য করলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা শহরের বাসের অবস্থা অনেক করুন। কোন বাসের গায়ে রং নেই আবার কোনটা ঘষা-মাজা করা। আপনারা অসম প্রতিযোগিতা করে একটি বাস অন্যটিকে ওভারটেক করবেন না। যাতে করে আর কোন নীরিহ মানুষের জীবন আপনাদের প্রতিযোগিতার কারণে শেষ হয়ে না যায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। ঢাকা শহরের যাত্রীর অভাব নেই। কেন আপনি যাত্রী নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করবেন? শুধু আইন প্রয়োগ করে শৃংখলা আনা সম্ভব নয়, দরকার সকলের সচেতনতা। আমরা ভবিষ্যতে বাসে আর কোন মা-বোনদের যৌনহয়রানি বা শ্লীলতাহানি দেখতে চাই না। সকলে পুলিশকে সহযোগিতা করুন।
খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, কিছু দিন আগে ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা আমাদের লজ্জিত করেছে। বিবেকের তাড়নায় আমরা মালিক-শ্রমিকদের সাথে একের পর এক সভা করেছি। মালিক, চালক ও শ্রমিকদের সচেতন করতে দীর্ঘ একমাস যাবৎ বিভিন্ন স্থানে আমরা সভা সমাবেশ করছি। বাসে নারী ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও শ্রমিকরা যাতে মাদক সেবন করতে না পারে সেদিকে আমরা বিশেষ নজর রাখছি।
পুলিশের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ড্রাগ ডিটেক্টর মেশিন দিয়ে ড্রাইভারকে পরীক্ষা করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে সে যেই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। লাইসেন্স ছাড়া কোন ড্রাইভার গাড়ি পাবে না। শুধু মালিক-শ্রমিক সচেতন হলে হবে না। পথচারী, যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। রমজানে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পুলিশের সাথে চালকদেরও দায়িত্বের সাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
এর আগে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক (উত্তর) মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক (দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহমেদ পিপিএম, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরুসহ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান, ট্রাফিক দক্ষিণের উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম মুরাদ আলিসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতি ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।