রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজের ভারী মালামাল নিরাপদে ও দ্রুত পরিবহনসহ ওই এলাকার যোগোযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে নতুন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। দেশের সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রেলপথ স্থাপনের জন্য পাবনার ঈশ্বরদী থেকে রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প পর্যন্ত এ রেলপথ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
মঙ্গলবার রেলভবনে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) মো. মজিবর রহমান এবং ঠিকাদার কোম্পানির পক্ষে শুভাষ চন্দ্র হাওলাদার চুক্তিতে সই করেন।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) জিপিটি-এসইএল-সিসিসিএলকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভারতের জিপিটি এবং বাংলাদেশের এসইএল ও সিসিসিএল ২৯৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় ঈশ্বরদী বাইপাস টেক অব পয়েন্ট থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করবে।
চুক্তি অনুযায়ী, জিপিটি-এসইএল-সিসিসিএল আগামী ১৮ মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করবে বলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান।
রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক অনুষ্ঠানে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এ প্রকল্পের মালামাল ও যন্ত্রপাতি পৌঁছাতে এ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত এ কাজ শেষ করবে বলে আশা করি।
রেলমন্ত্রী আরো বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি মন্ত্রণালয়ের চাহিদার ভিত্তিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রেল সংযোগের জন্য সিগন্যালসহ রেললাইন সংস্কার ও নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সার্বিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনা স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে ঈশ্বরদী বাইপাস টেক অব পয়েন্ট থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ স্থাপিত হবে। সুতরাং খুব সহজেই চট্টগ্রাম ও খুলনা বন্দর থেকে মালামাল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিবহন করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ প্রকল্পের আওতায় যে ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার নতুন রেললাইন হবে, তার মধ্যে ২২ দশমিক ০২ কিলোমিটার হবে মূল লাইন, আর ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার হবে লুপ লাইন। এছাড়া, ১৩টি লেভেলক্রসিং গেইট, একটি ‘বি’ শ্রেণির স্টেশন ভবন, একটি প্ল্যাটফর্ম এবং সাতটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।
এই রেললাইন হলে চট্রগ্রাম ও খুলনা বন্দর থেকে সহজেই বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে বলে অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোজাম্মেল হোসেন, রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, সিসিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।