কক্সবাজারের কুতুপালং-এ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, সুরক্ষা ও সহায়তা প্রদান করায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। কুতুপালং এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গ্রান্ডি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন জাতীয় ও স্থানীয় সংস্থা এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে নিয়ে এবং দাতা সংস্থাসমূহের সহায়তায় এ সমস্যা সমাধানে ব্যাপক কাজ করেছে। যদিও এখনো অনেক শরণার্থী সেখানে গাদাগাদি করে বসবাস এবং অনিশ্চিত জীবনের মধ্যে অবস্থান করছে।’
ইউএনএইচসিআর-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রান্ডি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের এ ব্যাপারে বড় ধরনের জরুরি প্রস্তুতি রয়েছে, কিন্তু যে কোনো বিপর্যয় এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন অবশ্যই প্রয়োজন।’ ইউএনএইচসিআর-এর এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের শত শত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরার অধিকারের বিষয়টি এখন মূল পরিকল্পনায় নিয়ে আসতে হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে ৬ লাখ ৮৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস সহিংসতার কারণে তারা পালাতে বাধ্য হয়, যার ফলে দশক ধরে রোহিঙ্গারা মাতৃভূমি ছেড়ে এভাবে গৃহহারা হচ্ছে।
নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে গ্রান্ডি বলেন, ‘এই সংকটের উৎপত্তি হয়েছে মিয়ানমারে এবং এ সংকটের সমাধানের পথ বের করার জন্য অবশ্যই একটি বিশুদ্ধ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া চালাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধানের মূলে থাকবে স্বেচ্ছা ও নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় তাদের বাড়িতে ফেরা।’
গত আগস্ট থেকে এই সংকটের সূচনা হয়, যখন মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চল রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সহিংসতা চালায়। ওই সময় হাজার হাজার শিশু, নারী-পুরুষ জীবনের নিরাপত্তায় সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
প্রায় ছয় মাস পর হঠাৎ করেই রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা কমে যায় উল্লেখ করে গ্রান্ডি বলেন, কিন্তু এখনো সীমান্ত অতিক্রম করে কিছু কিছু রোহিঙ্গা আসছে। তিনি সতর্ক করে দেন যে, ‘স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের অবস্থা এখনও সহায়ক নয়।’