বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ছয় কোটি ইউরো সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে জার্মান সরকার। সরকারের জরুরি ত্রাণ তহবিল থেকে এই সহযোগিতা দেওয়া হবে। গতকাল সোমবার বিকেলে জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান সাইবার্ট বার্লিনে এই ঘোষণার কথা জানান। খবর- স্পিগেল অনলাইন সংস্করণের।
মুখপাত্র স্টেফান সাইবার্ট বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক শরণার্থীরা এই মুহূর্তে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ ছাড়া এ ঘটনা মানবতার বিরুদ্ধে আগ্রাসন।
তিনি আরো বলেন, বার্লিনের এই সাহায্য জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের সহযোগিতায় সীমান্তের দুই দিকে জরুরি খাদ্য, চিকিৎসা ও মৌলিক চাহিদার জন্য ব্যয় করা হবে।
এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে সহযোগিতার ঘোষণা দেওয়ার আগে সরকারের সমালোচনা করেছিল জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দল। তারা বলেছিল, জার্মান সরকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখছেন না।
পরিবেশবাদী সবুজ দলের নেতা ফলকার বেক বলেছিলেন, মাত্র চার সপ্তাহের মধ্য চার লাখের বেশি শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
প্রয়োজনে এই শরণার্থীদের জার্মানিতে বা ইউরোপের অন্য দেশগুলোতে আশ্রয় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের পুলিশ পোস্ট ও সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের হামলার ঘটনার পর থেকে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে শুরু হয় সেনা অভিযান। আর সেনাবাহিনীর এ অভিযান চলাকালে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুরা। এমনকি তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এই নির্যাতন থেকে নিজের প্রাণ বাচাতে এখন পর্যন্ত ৪ লাখের উর্ধে মুসলিম রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪০ হাজার শিশু বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর জোট ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি)।