এর আগে ১৮ জানুয়ারি চীন থেকে ব্রিটেনে প্রথম সরাসরি ট্রেনটি পৌঁছেছিল। এরপর ১০ এপ্রিল ট্রেনটি আবার চীনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ ট্রেন যাত্রায় প্রায় ১৮ দিন সময় লাগার হিসাব করা হয়েছে। তবে এবারের যাত্রায় চীনে ফেরত আসতে প্রায় দুই দিন অতিরিক্ত লেগেছে। অবশ্য সমুদ্রপথে যাতায়াতে এর চেয়ে আরও ৩০ দিন সময় বেশি লাগে।
প্রাচীনকালে মধ্য এশিয়া হয়ে ইউরোপগামী বাণিজ্য রুটটি সিল্ক রোড নামে পরিচিত ছিল। এর মধ্য দিয়ে পরিবাহিত সামগ্রীগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল রেশম। যে কারণে পথটি এ নামে পরিচিতি পায়। কালের বিবর্তনে সেটি হারিয়ে গিয়েছিল। অর্থনৈতিক উন্নতি ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে ওঠার সুবাদে চীনের নেতৃবৃন্দ সেই পুরনো সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার স্বপ্ন অনেকদিন ধরেই দেখছিলেন। চীনে ফেরত আসা ট্রেনটিতে ফার্মাসিউটিক্যাল, অটো পণ্য, বিলাস সামগ্রী, কৃষি ও খাদ্য বোঝাই ছিল।
নতুন সিল্ক রোড চীন ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সুদৃঢ় করবে। ৩২টি কন্টেইনারের সমম্বয়ে চায়না রেলওয়ে এক্সপ্রেসের ট্রেনটি ১২ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ৯টি দেশের সীমানা অতিক্রম করে শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় লন্ডন থেকে চীনের ঝেজিয়াংয়ের ইয়াউ শহরে এসে পৌঁছে।
এই ঘটনা কেবল দুটি দেশ নয় বরং দুটি মহাদেশ ও দুই সংস্কৃতির মধ্যেও যোগাযোগের নতুন যুগের সূচনা করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেসকরা।
ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে রেল যোগাযোগ এটাই প্রথম নয়। চীন ছাড়া মধ্য এশিয়ার অনেক দেশের সঙ্গে গত প্রায় এক দশক ধরে ট্রান্স এশিয়া রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে। সিল্ক রোডের পুনরুজ্জীবনের বিষয়টিও এ সময় থেকেই দুই মহাদেশের নীতি নির্ধারক মহলের পরিকল্পনায় ছিল। তবে চীনের সঙ্গে রেল যোগাযোগ কতটা টেকসই হবে তা নিয়ে অনেক ইউরোপীয়র সংশয় ছিল। তা সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে ইউরোপের ১৫ শহরের সঙ্গে চীনের ২০টি শহর ৩৯ লাইন রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। এসব রুটে বছরে প্রায় ২ হাজার ট্রেন চলাচল করছে। বেশিরভাগই মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।