বিরাট কোহালিরা বড় লক্ষ্যের সামনে তাদের দাঁড় করালেও তারা যে টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, রবিবার ভারতকে সাবাইনা পার্কে তা মনে করিয়ে দিয়ে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একা ২৫ বছর বয়সি ত্রিনিদাদিয়ান এভিন লিউইস তাঁর ব্যাটে ঝড় তুলে প্রায় উড়িয়ে দিল ভারতকে। ৬২ বলে ১২৫ রান করলেন বিধ্বংসী লিউইস, যার মধ্যে এক ডজন ছয় আর হাফ ডজন চার।
সফরের একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের ১৯১ রানের টার্গেট দেয় ভারত। আস্কিং রেট দশের কাছাকাছি। যা দেশের মাটিতে আজ পর্যন্ত কখনও পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ১৫২ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল তাদের। কিন্তু রবিবার সাড়ে আঠারো ওভারে ১৯৪-১ তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বুঝিয়ে দেয়, টি-টোয়েন্টিতে এখন কোনও রানই অসম্ভব নয় লিউইসদের কাছে।
টানা ছ’টা ম্যাচে টস হারার পর এ দিন প্রত্যাশা মতোই ওপেন করতে নেমেছিলেন বিরাট কোহালি। সঙ্গী ছিলেন শিখর ধবন। দু’জনে মিলে ছ’ওভারের মধ্যে ৬৪ রান তুলে দেন। এর পর কেসরিক উইলিয়ামস ফিরিয়ে দেন কোহালিকে (২২ বলে ৩৯)। অধিনায়ক সাতটা ছয় এবং একটা চার মারেন। ১২ বলে ২৩ রান করে রান আউট হন ধবন। শেষ পর্যন্ত দীনেশ কার্তিকের ২৯ বলে ৪৮ ও সিরিজে প্রথম মাঠে নামা ঋষভ পন্থের ৩৫ বলে ৩৮-এর উপর ভর করে ২০ ওভারে ১৯০-৬ রান তোলে ভারত।
ওয়ান ডে সিরিজে সহজ জয় পাওয়ার পরে এই ম্যাচের জন্য ক্রিস গেল, কায়রন পোলার্ড, সুনীল নারাইনদের ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গেল বলেছিলেন, তাঁর লক্ষ্য ২০১৯ বিশ্বকাপে দলে সুযোগ পাওয়া। কিন্তু এ দিন যে ভাবে ২০ বলে ১৮ রান করে ধোনির হাতে স্টাম্পড হয়ে ফিরে গেলেন, তাতে তাঁর সেই ইচ্ছে নিঃসন্দেহে ধাক্কা খাবে। বরং উল্টোদিকে তুমুল মারলেন তাঁর সঙ্গী ওপেনার এভিন লিউইস। প্রথম তিন ওভার শান্ত থাকার পরে চতুর্থ ওভার থেকে ঝড় তোলেন তাঁর ব্যাটে। মহম্মদ শামিকে পরপর তিন বলে তিনটে চার মারার পর অশ্বিনকেও পরপর দুটো ছয় হাঁকান। কিন্তু পাঁচ বলের ব্যবধানে শামি ও কার্তিক পরপর ক্যাচ ফেলে তাঁকে জীবন দানও করেন। ক্যাচ ধরতে গিয়ে শামির সঙ্গে প্রায় ধাক্কাই লেগে যাচ্ছিল বিরাটের। আকাশে ওঠা বলটা ধরবেন বলে কল দিয়েছিলেন বিরাট। কিন্তু শামি বোধহয় তা শুনতে পাননি। ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে প্রচুর বকাঝকা খেতে হয় তাঁকে।
এই ম্যাচে তিন স্পিনার নিয়ে খেলে ভারত। আর অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজা এবং কুলদীপ যাদব। কিন্তু কাউকেই রেয়াত করেননি লিউইস। খেলার শেষে বলেন, ‘‘ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিটা বড় ব্যাপার। সম্প্রতি ফর্ম ভাল যাচ্ছিল না। ফর্মে ফিরে তাই ভাল লাগছে।’’ ক্ষুব্ধ কোহালি বলেন, ‘‘আমাদের ২৩০ তোলা উচিত ছিল। তার উপর দু’টো ক্যাচ ফেলেছি আমরা। এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারলে আমাদের জেতা মুশকিল। তবে আমাদের বোলিং, ফিল্ডিং কোনওটাই ভাল হয়নি। ওদের টি-টোয়েন্টি টিম সত্যিই ভাল।’’