মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে বাড়ি ভাড়া মহা বিড়ম্বনার এক নাম। বছর না ঘুরতেই বাড়িওয়ালা নানা অজুহাতে বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কিন্তু পৃথিবীতে এমনও স্থান রয়েছে যেখানে এক দুই বছর নয়, গত পাঁচ শ বছরে একবারের জন্যও বাড়ি ভাড়া বাড়েনি।
অদ্ভুত এই শহরটির নাম ফুগেরেই। জার্মানির অগসবার্গে অবস্থিত ছবির মতো সাজানো এই গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৫১৪ সালে। জ্যাকব ফুগার নামের এক ধনী ব্যক্তি শহরটির প্রতিষ্ঠাতা। শহরটির গোড়াপত্তনের সময় স্থানীয় দরিদ্র মানুষের কথা মাথায় রেখে জ্যাকব ফুগার একটি হাউজিং কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামের সাথে মিল রেখে হাউজিং কমপ্লেক্সটির নামকরণ করা হয়।
কমপ্লেক্সের প্রতিটি বাড়ির বার্ষিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ওই সময়ের মুদ্রায় এক রিহিনিস গিল্ডার যা বর্তমানে এক মার্কিন ডলার বা চুরাশি টাকার সমান। কয়েক শ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ভাড়া এক পয়সাও বাড়েনি। তবে বাড়ি ভাড়ার পাশাপাশি বাসিন্দার কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা নেয়া হয় গির্জা ও রাস্তা মেরামতের জন্য।
৬৭টি বাড়ি এবং ১৬৭টি এপার্টমেন্ট মিলিয়ে ফুগেরেই শহরের বাসিন্দা বর্তমানে ১৪২ জন। অধিকাংশ বাসিন্দা কয়েক পুরুষ ধরে এখানে বাস করছেন। ছোটখাটো কিছু সমস্যা থাকলেও তারা এই হাউজিং কমপ্লেক্স ছেড়ে কোথাও যেতে চান না। কারণ এত সস্তায় এরকম ছবির মতো সাজানো বাড়ি মিলবেই বা কোথায়!
জ্যাকবের স্বপ্ন ছিল দরিদ্র মানুষ যেন তাদের সাধ্যের মধ্যে বাড়ি ভাড়া পায়। তবে এখানে বসবাসের জন্য তিনি কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। বাসিন্দাকে অবশ্যই ক্যাথলিক এবং কমপক্ষে অগসবার্গের দুই বছরের বাসিন্দা হতে হবে। এছাড়া রাত দশটায় কারফিউ মেনে চলতে হবে ও স্থানীয় চার্চে তিনবার তাকে প্রার্থনার অঙ্গীকার করতে হবে। বাসিন্দাদের জন্য এখন পর্যন্ত এই শর্ত বহাল রয়েছে।