সব বাধা অতিক্রম করে অবশেষে দুই চল্লিশোর্ধ মহিলা দক্ষিণ ভারতের কেরালায় বিতর্কিত শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন। নতুন বছরের শুরুর দিনেই এই ইতিহাস তৈরি করেছেন বিন্দু এবং কণকদুর্গা নামের দুই মহিলা। তারা এদিন আলাপ্পাকে দর্শন করেছেন। অবশ্য এজন্য পুলিশের সাহায্য নিতে হয়েছে বলে জানা গেছে। শবরীমালা মন্দির কর্তৃপক্ষের কড়া ফতোয়া ছিল, কোনও ঋতুবতী মহিলা আলেপ্পার মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না। ১০ থেকে ৫০ বছরের অর্থাৎ ঋতুকালীন বয়সের মহিলাদের প্রবেশ করতে না দেবার প্রথা বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছিল।
এমনকি, মন্দিরে ঢোকার সময় বয়সের প্রমাণপত্রও দেখাতে হতো মন্দির কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কয়েকজন মহিলার আবেদনের ভিত্তিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দেয় যে, ধর্মাচরণে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ করা যায় না। সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই তা ঘিরে শুরু হয়েছিল অশান্তি। কট্টরপন্থীদের বিক্ষোভের আঁচে পড়ে কেরালা। গত ২৪শে ডিসেম্বর মন্দির খুললে শবরীমালায় যেতে গিয়ে বাধা পান জনা ছয়েক মহিলা। এর পরেও অনেকবার মহিলারা শবরীমালা পাহাড়ের শীর্ষে থাকা আলেপ্পার মন্দিরে যাবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কট্টরপন্থী ভক্তদের প্রবল বাধায় কোনবারেই কোনও মহিলা উপরে উঠতে পারেন নি। এই নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বিরোধীরা দাবি করেছেন, পুলিশ সহায়তায় মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেয়া হোক। অবশেষে কয়েকজন মহিলা ভোর রাত থেকে পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে দু’জন সকালে মন্দিরে প্রবেশ করে আলেপ্পাকে দর্শন করেছেন। পুলিশের দাবি, সাত সকালেই মন্দিরে ঢুকে আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে প্রার্থনা করে ফিরে এসেছেন তারা। সেই সঙ্গেই অবসান হয়েছে ১০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার। যদিও আয়াপ্পা ভক্তদের বক্তব্য, দুই মহিলার দাবি সঠিক নয়।