অভিভাবকরা এখন শিশুদের তার প্রিয় কার্টুন দেখিয়ে ঘুম পাড়াতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আপনি নিজে যখন ছোট ছিলেন তখন হয়তো দাদা-দাদি অথবা নানা-নানির কাছে শুনেছেন বহু গল্প। আপনার শিশুর বয়স যদি ৩-১০ বছর হয় তবে অবশ্যই এই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এমন না করে বিছানার পাশে শুয়ে তাকে ৫-১০ মিনিটের একটি গল্পের বই পড়ে শোনালে পাবেন কিছু উপকার।
নিজের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা দেয়
বর্তমানে আমাদের সমাজ এবং সংস্কৃতি অনেক বদলে গেছে। কুলা, ঢেঁকি, পালকি, শীতের পিঠা, নবান্ন উৎসব, গ্রামীণ মেলা, নিজের সংস্কৃতি, নিজের সমাজ সম্পর্কে শিশুকে ধারণা দিন।
শিশুদের মধ্যে শোনার দক্ষতা বাড়ে
শিশুরা সাধারণত কোনোকিছু শোনার চেয়ে বলতেই বেশি ভালোবাসে। কিন্তু যখন শিশুদের আপনি গল্প পড়ে শোনাবেন তখন আস্তে আস্তে তার মধ্যে আগ্রহ নিয়ে শোনার এবং শুনে বোঝার চেষ্টা বাড়বে আর একই সাথে তার মধ্যে মনোযোগ বাড়বে।
কল্পনাশক্তি বাড়ায়
শিশুদের কল্পনাশক্তি বাড়ানোর জন্য গল্পের বইয়ের চেয়ে ভাল উপায় আর নেই। তাই কার্টুন বা গেমস নয়, বরং শিশুকে গল্পের বই পড়ে শোনান।
শিশুদের মধ্যে ভাষার দক্ষতা বাড়ে
শিশুকে ২-৩ বছর বয়স থেকেই গল্প পড়ে শোনান। নতুন নতুন শব্দ এবং তাদের উচ্চারণ শিখে ফেলবে দ্রুত। গবেষণায় দেখা গেছে যেসব শিশুরা বাবা এবং মা দুজনের কাছেই গল্প শুনে তারা বেশি শব্দ শিখে এবং ভাষার উপর দখল ভাল হয়।
শিশুদের মধ্যে সৎগুণের বিকাশ ঘটায়
গল্পের শেষে একটি অর্থপূর্ণ শিক্ষা থাকে সেগুলো আপনার শিশুর মধ্যে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, সৎসাহস, বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করে।
কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সাহায্য করে
গল্পের চরিত্রগুলোর সমস্যা, সমস্যার সাথে যুদ্ধ করে তা থেকে বের হওয়ার এই ব্যাপারগুলো আপনার শিশুকে দুঃখ-কষ্ট এবং সমস্যা জীবনের একটি অংশ তা বুঝাবে। সঠিক গল্পের বই শিশুকে জীবনের নানা সমস্যা মোকাবেলার জন্য তৈরি করে দেয়।
গল্পের বই স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
একটি গল্প শুনানোর পরে শিশুর কাছ থেকেই আবার শুনে নিন। এতে করে আপনার শিশুর স্মৃতিশক্তি তো বাড়বেই পাশাপাশি তার মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতাও বাড়বে।
শিশুর চিন্তার প্রসার ঘটায়
গল্পের বই আপনার শিশুকে নিজের দেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্য দেশ ও বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে সাহায্য করবে।
যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ায়
গল্পবলা শিশুকে সঠিক প্রশ্ন করার ক্ষমতা তৈরি করে দেয়। এটি শিশুদের চমৎকার কথোপকথন করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। নিয়মিত গল্পের বই পড়া ও গল্প শোনা একজন শিশুকে ভাল বক্তা হতেও সাহায্য করে।
পড়াশুনাকে করে দেয় আরো সহজ
শিশুর কাছে যদি স্কুল জীবনকে সহজ করতে চান তবে ছোটবেলা থেকেই গল্পের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অনেক শিশু না বুঝে মুখস্ত করে, গল্পের বই পড়ার অভ্যাস থাকলে সে ছোটবেলা থেকেই বুঝে শেখার চেষ্টা করে।