সৌদি আরবে নিরাপত্তা বাহিনী ও শিয়া বিদ্রোহীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক বাংলাদেশিসহ চার প্রবাসী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ শিয়া অধ্যুষিত আল কাতিফের আওয়ামিয়া এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের এ ঘটনা ঘটলেও সোমবার নিহতের পরিচয় জানা গেছে।সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) সারওয়ার আলম জানান, নিহত হোসাইন মোহাম্মদ আলমগীর চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার মোজাফফর খানের ছেলে। ওই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি ও একজন ভারতীয় বলে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়। নিহতদের লাশ দাম্মাম সেন্ট্রাল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
ওই অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের আইন সহায়তাকারী কর্মকতা মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, “আল কাতিফে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্রুত এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।রোববার নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৫ জন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হলেও তাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ না হওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।ফয়সাল বলেন, “রোববারও কাতিফ ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার থানা ভবন সৌদি এলিট ফোর্স ঘিরে আছে। ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ৫ হাজার স্পেশাল ফোর্সের সেনা আনা হয়েছে।সরকারিভাবে আল-মাসুরার পাশে শিয়া সমর্থক অধ্যুষিত আওয়ামিয়া এলাকার ১১টি মহল্লা থেকে সবাইকে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে সরকারিভাবে অন্য জায়গায় বাসস্থান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।সোমবারও ওই এলাকায় গোলাগুলির আওয়াজ শুনেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশের সহায়তায় অনেক সৌদি পরিবারকে সেখান থেকে নিরাপদে বের হয়েও আসতে দেখেছি। এসময় কয়েকজন বাংলাদেশির সাথে দেখা হলে তাদেরকে দ্রুত ওই এলাকা ছাড়তে পরামর্শ দিলেও তারা আমলেই নেননি।”
এদিকে, রোববার পার্শ্ববর্তী আল মাসওয়ারাহ এলাকায় পুলিশের টহল দলকে লক্ষ্য করে ‘সন্ত্রাসীরা’ একটি রকেট হামলা চালালে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও ছয় পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।বর্তমানে পূর্বাঞ্চলের কাতিফ এলাকার আল মাসওয়ারাহ এবং আওয়ামিয়াহ এলাকায় চিরুনি অভিযান চলছে।সোদি আরবে এলাকাটিতে ২০১১ সাল থেকে অস্থিরতা চলছে; শিয়ারা সমঅধিকারের দাবিতে সুন্নি শাসিত সৌদিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করে।গত এক বছর ধরে পরিত্যক্ত ঘোষিত আল মাসওয়ারাহ এলাকা অবৈধ অভিবাসী এবং জঙ্গিদের আস্থানা হিসেবে পরিচিত। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে গুলি বিনিময় হয়।