সারাদেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহে শীতার্ত মানুষের সাহায্যে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে শীতার্ত মানুষের জন্য ২০ জেলায় ২৮ লাখ ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শীতার্ত মানুষের জন্য ৮০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিতরণ নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়, অধিদফতর এবং জেলায় জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা ও ২০ জেলায় ২০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। এ সময় দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মোঃ শাহ্ কামাল সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১০ লাখ ১১ হজার ৯০০ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ লাখসহ সর্বমোট ২৮ লাখ ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শীতার্ত মানুষের জন্য ৮০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অধিক শীতপ্রবণ ২০ জেলায় অতিরিক্ত ৯৮ হাজার পিচ কম্বল ও ৮০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। এর বিতরণ নিশ্চিত করতে এবং সার্বিক শৈত্যপ্রবাহ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে শীতপ্রবণ ২০ জেলায় মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে ২০ জন উর্ধতন কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়। ২০টি জেলা হল-দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, চাপাই নবাবগঞ্জ, নাটোর যাশোর, ঝিনাইদাহ, পাবনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, শৈত্যপ্রবাহে শীতবস্ত্রের জন্য কেউ যেন কষ্ট না পায়। সেই আলোকে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি ছিলো। শৈত্যপ্রবাহের আগেই ৬৪ জেলায় ৭ লাখ কম্বল এবং শীতপ্রবণ ৪১টি জেলায় দুই লাখ কম্বল সরবরাহ করেছি। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ লাখ কম্বল এরইমধ্যে বিতরণ শেষ হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার সঙ্গে সোমবার ২০ জেলায়, যেখানে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাতর সেখানে তাৎক্ষণিক এক লাখ কম্বল এবং ৮০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠিয়ে দিয়েছি। এছাড়া সংসদ সদস্য এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী ১২ হাজার ৯০০ কম্বল বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছি।
মন্ত্রী জানান, ২০ জেলায় ২০ জন কর্মকর্তা চলে গেছেন। শীত না নামা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন, যে কম্বল পাঠিয়েছি সেগুলো সুষ্ঠু বণ্টন করবেন এবং আরো প্রয়োজন হলে পাঠানো হবে। ‘আশ্বস্ত করতে চাই, কম্বল, শুকনো খাবার, টাকা মজুত আছে। শীতে কোনো মানুষ কষ্ট পাবে না। সেজন্য যা যা করা দরকার, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা তা করবো’। শীতার্ত মানুষগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিলে আমাদের সে প্রস্তুতি আছে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফয়জুর রহমানকে ফোকাল পয়েন্ট করে কন্ট্রোল রুম (০১৭২৭২১২১৬৯) খোলা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। ‘কন্ট্রোল রুমের মূল উদ্দেশ্য হলো ২৪ ঘণ্টা উই আর স্ট্যান্ডবাই’, বলেন মন্ত্রী। এছাড়া ডিজি অফিসে আরেকটি কন্ট্রোল রুম (০১৭১২০০০৬৩) খোলা হয়েছে। এছাড়া জেলায় জেলায় কন্ট্রোল রুম কাজ করবে। শীতে মারা গেছে, কম্বলবিহীন বা ওই ধরনের খবর আমাদের কাছে পৌঁছায়নি বলে জানান মন্ত্রী। একজনেরও মৃত্যু হয়নি। শীতের কারণে বা কম্বলের কারণে মৃত্যুর ঘটনা নেই বলে জানান ত্রাণ ও দুর্যোগ সচিব।