২১ জুন গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ১৭২তম (অধিবর্ষে ১৭৩তম) দিন। বছর শেষ হতে আরো ১৯৩ দিন বাকি রয়েছে। এ দিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখায় খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ দিনে উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও ছোট রাত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন ও বড় রাত।
সূর্যগ্রহণ হর-হামেশা হয় না। আবার হলেও পূর্ণগ্রাস হয় না সব সময়। রোববারের সূর্যগ্রহণও পূর্ণগ্রাস নয়, বলয়গ্রাস। অর্থাৎ চাঁদের আড়ালে সূর্য পুরোপরি ঢাকা পড়বে না। যখন সূর্যগ্রহণের ষোলকলা পূর্ণ হবে, অর্থাৎ চাঁদের ছায়া পুরোটা ঢেকে যাবে, তখনও ছায়ার চারপাশে একটা উজ্জ্বল বৃত্ত দেখা যাবে। অর্থাৎ সূর্যটা তখন চাঁদের চারপাশে দেখা যাবে রিং বা বলয়ের মতো। এ কারণেই এ ধরনের গ্রহণের নাম বলয়গ্রাস।
বাংলাদেশ থেকে পূর্ণ বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে না। দক্ষিণ এশিয়ার এ অঞ্চলে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। বাংলাদেশে আংশিক সূর্যগ্রহণ শুরু হবে সকাল ১১ টা ২৩ মিনিটে, শেষ হবে পৌনে দুটোয়। সর্বোচ্চ গ্রহণ দেখা যাকে দুপুর ১টা ১২ মিনিটে। বাংলাদেশে সূর্যগ্রহণ শেষ হবে দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে।
বছরের প্রথম বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ শুরু হয়েছে রোববার (২১ জুন) সকাল ৯টা ৪৬ মিনিট ৬ সেকেন্ডে। পৃথিবী থেকে এটির শেষ দেখা যাবে বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিটে।
আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ রোনাকী খোন্দকার জানিয়েছেন, সকাল ৯টা ৪৬ মিনিট ৬ সেকেন্ডে কঙ্গোর ইম্পফোল্ডো শহরে সূর্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে কঙ্গোর বোমা শহরে ১০টা ৪৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে। সর্বোচ্চ গ্রহণ ভারতের যোশীমঠ শহরে দেখা যাবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট ৬ সেকেন্ডে। কেন্দ্রীয় গ্রহণ শেষ হবে ফিলিপিনের সামার শহরে দুপুর ২টা ৩১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে। আর সূর্যগ্রহণ শেষ হবে ফিলিপিনের মিন্দানাও শহরে দুপুর ৩টা ৩৪ মিনিটে।
আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশের আকাশেও আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। রাজশাহীর আকাশে সূর্যগ্রহণ প্রথম শুরু হবে। আর সবশেষে গ্রহণ শেষ হবে চট্টগ্রামের আকাশে।
ঢাকায় সূর্যগ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ১২ মিনিট ২৯ সেকেন্ডে। আর শেষ হবে দুপুর ২টা ৫২ মিনিট ৩ সেকেন্ডে।
ময়মনসিংহে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২৩ মিনিট ২ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ১২ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৫১ মিনিট ২ সেকেন্ডে।
চট্টগ্রামে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ১৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৫৫ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে।
সিলেটে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ১৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৫৪ মিনিট ৫২ সেকেন্ডে।
খুলনায় গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২০ মিনিট ১৯ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ৯ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৫০ মিনিট ৯ সেকেন্ডে।
বরিশালে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ২৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ১২ মিনিটি ৩২ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৫২ মিনিট ১ সেকেন্ডে।
রাজশাহীতে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ১৭ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ৬ মিনিটি ২৬ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৪৭ মিনিটি ৫৫ সেকেন্ডে।
রংপুরে গ্রহণ শুরু হবে বেলা ১১টা ১৭ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে, কেন্দ্রীয় গ্রহণ শুরু হবে দুপুর ১টা ৭ মিনিটি ২০ সেকেন্ডে ও গ্রহণ শেষ হবে ২টা ৪৮ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে।
সর্বশেষ বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর। সেটাও বাংলাদেশ থেকে আংশিক দেখা গিয়েছিল।
সূর্যগ্রহণ কেন হয়ঃ
সূর্যগ্রহণের এই সময়টা যা মোটেও করবেন না:
সূর্যগ্রহণের সময় অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে খালি চোখে গ্রহণ দেখার চেষ্টা করেন। সূর্যগ্রহণ তো বটেই, যে কোনো সময় সূর্যের দিকে সরাসরি তাকানো চোখের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই সরাসরি না তাকিয়ে ফিল্টার গ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে, ওয়েল্ডিং করার সময় মেকানিকরা যে ধরনের গ্লাস ব্যবহার করেন, সেটাও ব্যবহার করা যেতে পারে। আথবা প্লেটে বা যেকোনো পাত্রে পরিষ্কার পানি নিয়ে তাতে কিছু পরিমাণ গুড়ো হলুদ মিশিয়ে সেই পানিতে সূর্যগ্রহণের প্রতিবিম্ব দেখা যেতে পারে। সাধারণ সানগ্লাস বা চশমা পরে কেউ সূর্যগ্রহণ দেখতে যাবেন না। টেলিস্কোপ বা ক্যামেরার সাহায্যে সূর্যগ্রহণ দেখতে হলে অত্যাধুনিক ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে। তা নাহলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি সরাসরি চোখের ওপর পড়ার সুযোগ পায়। সম্পূর্ণ অন্ধত্বসহ নানা রকম চোখের রোগ হতে পারে।