ডিএমপি নিউজ: মোঃ খায়রুল হোসেন বিপ্লব। চাকুরী করেন বনানীর ফেয়ার ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডে। প্রতিদিনের ন্যায় গত বছরের ২২ ডিসেম্বরও তিনি ব্যস্ত ছিলেন নিজ কাজে। বেলা তখন একটা ৪৩ মিনিট হতে একটা ৫৯। এই সময়ে একটি অপরিচিত মুঠোফোন থেকে কল আসে। তিনি রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে পুরুষ কন্ঠের একজন বলেন, “স্যার আমি বিকাশের ব্রাক ব্যাংক শাখা থেকে কল করেছি, আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করা আছে। বিকাশ অ্যাকাউন্টটি চালু করে দিলে আপনি আবার ক্যাশ আউট করতে পারবেন।” এরপর বিভিন্ন কথা-বার্তার ছলে বিপ্লবের মুঠোফোন নাম্বার ও পাসওয়ার্ডের যোগ-বিয়োগ করে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ১১০০০ টাকা উঠিয়ে নেয়।
আনুমানিক ১০মিনিট পর জনাব বিপ্লব বিকাশের হেলপ লাইন নাম্বারে কথা বলে বিষয়টি জানান। তখন সেখান থেকে জানানো হয় বেলা ০১:৫৯ মিনিটে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ১১,১১৫ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তখন বিপ্লবের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে তিনি প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন।
বিপ্লব এ সংক্রান্তে গত ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বিপ্লব বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগে জানান। বিষয়টির গুরুত্ব উপলদ্ধি করে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোপের দপ্তরে পাঠানো হয়।
সহকারী পুলিশ কমিশনার ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোপ বিপিএম ডিএমপি নিউজকে বলেন, বিপ্লবের ঘটনাটি শুনে আমরা তড়িৎ পদক্ষেপ নেই এবং বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রতারককে সনাক্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া ১১ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
আজ ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ মোঃ খায়রুল হোসেন বিপ্লব এসেছিলেন সেই টাকা নেওয়ার জন্য। টাকাটা হাতে পেয়ে তিনি কিছুক্ষণের জন্য আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
ডিএমপি নিউজকে বিপ্লব বলেন, আমি জিডিটা করেছিলাম সত্যি কিন্তু ভেবে ছিলাম এই ১১,০০০ টাকা হয়তো তেমন কিছু না। কিন্তু আমার মতো আর কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় এটাই আমি চেয়েছি। আমি ভেবেছিলাম টাকা হয়তো পাব না। কিন্তু না আজ যখন সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ থেকে একজন পুলিশ অফিসার আমাকে মুঠো ফোনে টাকা উদ্ধারের কথা জানান। আমিতো বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না এটা কীভাবে সম্ভব!
মোঃ খায়রুল হোসেন বিপ্লব আজ টাকা ফেরত পেয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য রইল দোয়া ও শুভ কামনা।
তাই সচেতন হোন, যেকোন তথ্য প্রদানে একটু ভেবে-চিন্তে প্রদান করুন আর নিরাপদ থাকুন।