রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ যেকোন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর সকল সদস্যকে সদা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২) সকাল ১০ টায় রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে জানুয়ারি ২০২২ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার।
প্রতি মাসে ঘটে যাওয়া অপরাধ বিশ্লেষণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী কর্মপন্থা ও কর্মকৌশল সম্পর্কিত নির্দেশনার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের কর্মোদ্দীপনা বাড়াতে প্রতিমাসের কার্যক্রম পয়েন্ট আকারে যোগ করে পরবর্তী মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুরস্কৃত করে থাকেন ডিএমপি কমিশনার।
সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়না। বিভিন্ন অপরাধের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে’’।
জানুয়ারি ২০২২ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে তেজগাঁও বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে মোহাম্মদপুর থানা।
ডিএমপির ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মুজিব আহম্মেদ পাটওয়ারী। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাঃ আহাদ আলী আর পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্)দের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন পল্লবী থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্) উদয় কুমার মন্ডল। শ্রেষ্ঠ এসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই সজিব খান ও কোতয়ালী থানার এসআই পবিত্র সরকার। শ্রেষ্ঠ এএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মতিঝিল থানার এএসআই মোঃ হেলাল উদ্দিন ও পল্লবী থানার এএসআই ফেরদৌস রহমান। ওয়ারেন্ট তামিল করে শ্রেষ্ঠ অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই সজিব খান। অস্ত্র উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন শ্যামপুর থানার এসআই সমরেশ কুমার দাস। বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম স্থান দখল করেছেন কোতয়ালী থানার এসআই পবিত্র সরকার। মাদক উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন মিরপুর মডেল থানার এসআই মোঃ তামিম রহমান এবং চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন মুগদা থানার এসআই মোঃ শাহিনুর রহমান।
৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন ডিবি-মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহিদুর রহমান। অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন। মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ সাহিদুর রহমান, পিপিএম। চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ডিবি উত্তরা বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং অজ্ঞানপার্টি/ মলম পার্টি গ্রেফতার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন গোয়েন্দা রমনা বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার নাজিয়া ইসলাম।
৮টি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন শাহবাগ ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ নুরনবী। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নির্বাচিত হয়েছেন শাহবাগ ট্রাফিক জোনের টিআই শাহ মোঃ লুৎফুল আনাম। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট/ টিএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট মাসুম চৌধুরী ও শাহবাগ ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট শফিকুর রহমান।
এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে ডিএমপি কার্যালয়ে গঠিত মনিটরিং সেলে মামলা, জিডি ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্তে কোন অভিযোগ না পাওয়ায় ডিএমপির রমনা মডেল থানা, শাহবাগ থানা, নিউমার্কেট থানা, খিলগাঁও থানা, কোতয়ালী থানা, ক্যান্টনমেন্ট থানা, উত্তরা-পূর্ব থানা, বিমানবন্দর থানা ও তুরাগ থানাকে বিশেষ পুরস্কারে প্রণোদনা প্রদান করা হয়।
বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয় ডিএমপির এস্টেট বিভাগ, সদরদপ্তর ও প্রশাসন বিভাগ, ওয়েল ফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স বিভাগ এবং লজিস্টিকস বিভাগকে।
এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম বিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম(বার), পিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম(বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ সকল থানার অফিসার ইনচার্জগণ উপস্থিত ছিলেন।