চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার দুইটি ত্রিপুরা পল্লীতে দুইটি অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশে এবং লাইন ডাইরেক্টর এমএনসিএন্ডএএইচ ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সরকায়ের পরামর্শে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন, ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী মধ্যম সোনাইছড়ির ত্রিপুরা পল্লীর বীরেন্দ্র ত্রিপুরার বাড়িতে এই টিকা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
এখানে এক বছর পর্যন্ত বয়সী সকল শিশুদের নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম চলবে, পাশাপাশি ১৫-৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের ধনুষ্টংকার এর টিকা প্রদান করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চার জন শিশু (শিশু বিশেষজ্ঞ কর্তৃক তাদের পুষ্টি অবস্থা বিচার করে) হাম সহ অন্যান্য টিকা দিয়ে এবং একজন মহিলাকে ধনুষ্টংকার এর টিকা দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
যে শিশুটি দিয়ে প্রথম টিকা দান কার্যক্রম শুরু হয় তার নাম সাজু ত্রিপুরা ,বয়স-১১ মাস। দুপুরেই অন্য ত্রিপুরা পল্লী দক্ষিণ সোনাইছড়ির মঙ্গা রাম ত্রিপুরার বাড়িতে আরেকটি অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন সীতাকুন্ড উপজেলার ইউএইচএন্ডএফপিও ডা. এসএম নুরুল করিম ।
দুই পাহাড়ে দুই অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রগুলোতে সপ্তাহে একদিন করে স্যাটেলাইট স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নির্দেশক্রমে উপরোক্ত দুইটি পাহাড়ের মাঝামাঝি অতি দ্রুত একটি অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র করার প্রক্রিয়া চলছে। উপরোক্ত পল্লী দুইটির সকল শিশুদের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নতির জন্য আইপিএইচএন এবং ইউনিসেফ বেশ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
যে শিশুরা হামে আক্রান্ত হয় নি তাদের শারীরিক অবস্থা সন্তোষজনক হলে তাদেরকে হামের টিকা (ওআরআই) প্রদান করা যেতে পারে বলে মত দেন ত্রিপুরা পল্লীতে উপস্থিত বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট (হাম) ডা. চিরঞ্জিত দাশ।
যে শিশুরা হামে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে ভালো হয়ে বাড়ি ফিরেছে তাদেরকে আরো তিন সপ্তাহ অন্য ছেলে মেয়েদের সাথে না মিশে আলাদা থাকতে অভিভাবকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগ থেকে মোট নয় জন ত্রিপুরা পল্লীর হাম আক্রান্ত শিশুকে সুস্থ হওয়ায় ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে এবং শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, এই সকল সুবিধা বঞ্চিত অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের পুষ্টিকর খাবার কেনার জন্য প্রত্যেকের অভিভাবকে ‘শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমিতি চট্টগ্রাম’ এর পক্ষ থেকে ১৫ শত টাকা করে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
এই পর্যন্ত মোট ৯৬ জন শিশুর মধ্যে ৩১ জনকে সুস্থতার জন্য বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৭ জন, বিআইটিআইডি সংলগ্ন সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ৮ জন ভর্তি আছে।