ডিএমপি নিউজঃ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারনার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতদের নাম- মোঃ জহিরুল ইসলাম ওরফে বাপ্পী ও এ এস এম জোবায়ের। এসময় তাদের হেফাজত হতে ০২ টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ০৩ টি ফ্যাক্সো সীল, ০৩টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়রে এডমিনের সীল, মন্ত্রণালয়রে লোগো সম্বলিত আইডি কার্ড, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ০৬ টি নিয়োগপত্র, ভিজিটিং কার্ড, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাড়ীর স্টীকার এবং উত্তরা ব্যাংক যশোর শাখার ০১ টি চেক বই, মন্ত্রণালয়ের সার্ভিস আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, স্টীকার ও সীল উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২) ডিএমপির কোতয়ালী থানার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস ডিএমপি নিউজকে জানান, ভুক্তভোগী এম এম নিজাম উদ্দিনের বাড়ী এবং মোঃ জহিরুল ইসলাম ওরফে বাপ্পীর শশুর বাড়ী একই এলাকায়। গত ৫/৬ মাস পূর্বে বাপ্পী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পার্সোনাল কাউন্সিলর পদে চাকরি পেয়েছে বলে তার শশুর বাড়ীর এলাকায় প্রচার করে। বাপ্পী তার শশুরবাড়ীর এলাকার মসজিদে এজন্য দোয়া মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। তাছাড়া তার শশুরবাড়ীর এলাকার এতিমখানায় দান-খয়রাত করেও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে বাপ্পী পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের চীফ অডিট অফিসার হয়েছে বলেও তার শশুরবাড়ীর এলাকার প্রচার করে।
এর কিছুদিন পর নিজাম উদ্দিন তার ছেলে ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বাপ্পীর সাথে আলোচনা করেন। বাপ্পী নিজাম উদ্দিনের ছেলেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অডিট অফিসার এবং তার ভাগ্নেকে খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এবং বিনিময়ে ১৬ লক্ষ টাকা দাবি করে। পরে নিজাম উদ্দিন তার ছেলে ও ভাগ্নের চাকরির জন্য বিভিন্ন তারিখে বাপ্পীকে সর্বমোট ১১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ বিকাল অনুমান ৩:৩০ ঘটিকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ের গেটে বাপ্পী এবং জোবায়ের ভুক্তভোগী নিজাম উদ্দিনকে তার ছেলে অডিট অফিসার ও তার ভাগ্নের খাদ্য অধিদপ্তরের স্টোর কিপার পদে চাকরির ২টি নিয়োগপত্র প্রদান করে। নিজাম উদ্দিন নিয়োগপত্র গুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেন নিয়োগপত্র গুলো ভূয়া।
নিজাম উদ্দিন আরও যাচাই-বাছাই করে দেখেন যে, বাপ্পী ও জোবায়ের কেউই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন না। এর পর থেকে নিজাম উদ্দিন তাদের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনর্চাজ পল্লবী থানা একটি প্রতারণার মামলা রুজু করেন। গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ মামলাটি তদন্তের ভার গ্রহণ করে এবং বাপ্পী ও জোবায়েরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সর্ম্পকে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা নিজেদেরকে বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাকরি ও বিভিন্ন তদবিরের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের পল্লবী থানার মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে মর্মে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা।
গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ, বিপিএম এর দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, বিপিএম, পিপিএম এর তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাসের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।