বিশ্বব্যাপি সম্প্রতি যেসব দু:সাহসী সাইবার আক্রমণগুলো হয়েছে তার পেছনে হাত ছিল উত্তর কোরিয়ার প্রধান গুপ্তচর সংস্থার একটি বিশেষ সেল-এর, বলছেন দলত্যাগী হ্যাকার ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এসব আক্রমণের একটি ছিল বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা চুরির ঘটনা । খবর বিবিসি।
এই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রধান গুপ্তচর সংস্থার বিশেষ সেলটির নাম হচ্ছে ‘ইউনিট ১৮০’ ।
দক্ষিণ কোরিয়ার সোল থেকে রয়টারের এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। উত্তর কোরিয়া অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করছে।
গত বছর বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি যাবার ঘটনার সাথে ল্যাজারাস নামে যে হ্যাকিং গ্রুপটি জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছিল – তাদের সাথে উত্তর কোরিয়ার যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তারা।
রয়টারের রিপোর্টে আরো বলা হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনার ব্যাপারে পিয়ংইয়ং-এর বিরুদ্ধে একটি মামলা তৈরি করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সারা বিশ্বব্যাপি সাইবার আক্রমণের ঘটনাসহ একাধিক হ্যাকিংএর ঘটনার পেছনে উত্তর কোরিয়ার হাত ছিল বলে অভিযোগ উঠছে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অর্থসংক্রান্ত নেটওয়ার্কগুলো আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত হয় ১৫০টি দেশের প্রায় ৩ লক্ষ কম্পিউটার।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনা ছাড়াও্র সনি’র হলিউড স্টুডিওর ওপর ২০১৪ সালে যে সাইবার আক্রমণ হয়েছিল তাতেও উত্তর কোরিয়া জড়িত ছিল।
উত্তর কোরিয়া এসব অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্তু দলত্যাগকারী হ্যাকার, ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রধান গুপ্তচর সংস্থার ‘ইউনিট ১৮০’ নামে একটি বিশেষ সেল আছে – এবং তারাই সাম্প্রতিককালের এসব দু:সাহসী সাইবার আক্রমণগুলো চালিয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন চং-গি রয়টারকে দেয়া এক লিখিত মন্তব্যে বলেন, উত্তর কোরিয়া সাইবারের আক্রমণের উৎস আড়াল করতে অন্য দেশকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে, এবং তাদের প্রযুক্তি ও নেটওয়ার্ককে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনা ছাড়াও ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম এবং পোল্যান্ডের কিছু ব্যাংকের ওপর আক্রমণের জন্যও পির্য়ইয়ংকে সন্দেহ করা হয়।
গবেষকরা বলছেন, তারা এমন কিছু কারিগরী সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছেন যাতে বোঝা যায়, এমাসে ‘ওয়ানাক্রাই’ নামে র্যানসমওয়্যার দিয়ে এমাসের শুরুর দিকে বৈশ্বিক সাইবার আক্রমণের পেছনে উত্তর কোরিয়া সম্পর্কিত ছিল।
অবশ্য এখন পর্যন্ত নিংসন্দেহ হবার মত কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি এবং কোন ফৌজদারি অভিযোগও দায়ের করা হয় নি।