ডিএমপি নিউজ:দীর্ঘ ১২ বছর পর গাজীপুরে মা ও ছেলে হত্যা মামলার রহস্য উদযাটনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতদের নাম হলো-মোঃ সোহেল ফকির, আনোয়ার হোসেন ও লিটন মিয়া। এদের মধ্যে সোহেল ফকির ভিকটিমের স্বামী।
গত ২৭ অক্টোবর, ২০১৯ ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সোহেল ফকিরকে এবং পরেরদিন গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সোহেল ফকিরের দুই সহযোগী আনোয়ার ও লিটনকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই, ২০০৭ গাজীপুর কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক – মির্জাপুর রেলরাইনের পাশে নিয়ে ভিকটিম রত্না বেগম (২০) কে শ্বাসরোধ করে এবং তার শিশু সন্তান নুরুজ্জামান (২ মাস ১৭ দিন) কে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে ভিকটিম রত্নার স্বামী সোহেল ও সহযোগীরা। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় সোহেল ফকিরকে অভিযুক্ত করে ভিকটিমের পিতা ঢাকা রেলওয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন । এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৭ জুলাই, ২০০৭ তারিখে মামলা রুজু হয়।
মামলাটি প্রথমে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞ আদালতের আদেশে মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নুরুন্নবী ডিএমপি নিউজকে জানান, অভিযুক্ত সোহেল ফকির নিজের ঠিকানা গোপন করে ২০০৬ সালে ভিকটিম রত্না বেগমকে বিবাহ করে। বিবাহের পর তাদের সংসারে মোঃ নুরুজ্জামান নামে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত সোহেল ফকির গার্মেন্টসে চাকরী করার সুবাদে কল্পনা আক্তার নামে অপর একজন গার্মেন্টস কর্মীর সাথে সম্পর্ক তৈরি করে এবং প্রথম বিয়ে গোপন করে কল্পনাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। অত:পর কল্পনা আক্তারের অত্মীয়স্বজন সোহেল ফকিরের প্রথম বিয়ের কথা জানতে পেরে তার উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে সোহেল ফকির তার ২য় স্ত্রীর মামা লিটন মিয়া এবং খালাতো ভাই আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে প্রথম স্ত্রী ভিকটিম রত্না বেগম ও একমাত্র সন্তান নুরুজ্জামানকে হত্যা করে।
তদন্তকারী ঐ কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত ১২ বছর আসামী মোঃ সোহেল ফকির ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে নিজের পরিচয় গোপন করে কামরুল হাসান নাম পরিচয় দিয়ে চাকুরী করে আসছিল।
নুরুন্নবী আরো জানান, এই জোড়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সোহেল ও তার দুই সহযোগী বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মামলাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।