সিরিয়া থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আচমকা সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার এক মাস না যেতেই এ প্রক্রিয়া শুরু হলো। গতকাল শুক্রবার জোটের এক মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে ২০১৪ সাল থেকে লড়াই করছে জোটের সেনারা। তাদের প্রত্যাহার শুরু হলেও কবে নাগাদ এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। জোটের মুখপাত্র কর্নেল শন রায়ান এক বিবৃতিতে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সিজেটিএফ-ওআইআর সেনাদের (জোটের জঙ্গিবিরোধী বাহিনী) সিরিয়া থেকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যাহারের স্থান-কাল কিংবা সেনার সংখ্যা আমরা জানাব না।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ অবশ্য দাবি করেছে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাসাকেহ প্রদেশের মেইলান বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে দাবি করে, ‘গত বৃহস্পতিবারও অল্পসংখ্যক মার্কিন সেনাকে ওই ঘাঁটি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের এটিই প্রথম ঘটনা।’
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের আরো কয়েকটি ঘাঁটি রয়েছে। একই ধরনের ঘাঁটি রয়েছে পাশের দেশ ইরাকেও। ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরাকে মার্কিন সেনাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, সিরিয়া থেকে এরই মধ্যে অনেক সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
মার্কিন নেতৃত্বাধীন এ জোটে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সেনাও আছে। গত মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প বলেন, আইএস পরাজিত হয়েছে; এ কারণে মার্কিন সেনাদের আর সিরিয়ায় থাকার প্রয়োজন নেই। অনেকেই তাঁর এ সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এখনো সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কায়রো সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ‘যত সমালোচনাই হোক, সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।’
এর কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন অবশ্য সেনা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে দুটি শর্তের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আইএসের পরাজয় এবং স্থানীয় কুর্দি যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরই সেনা প্রত্যাহার করা হবে। উল্লেখ্য, কুর্দি যোদ্ধারাও সেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সহযোগী হিসেবে আইএসের বিরুদ্ধে লড়ছে। তুরস্ক চায় না, যুক্তরাষ্ট্র এসব কুর্দি যোদ্ধাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করুক। অন্যদিকে কুর্দি যোদ্ধাদের আশঙ্কা, যেকোনো সময় তাদের বিরুদ্ধে তুরস্ক অভিযান চালাবে। এ অবস্থায় বোল্টনের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছিল তুরস্ক।