সিলেট- লন্ডন রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আজ সকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন। সপ্তাহের প্রতি বুধবার এই ফ্লাইট পরিচালিত হবে। উদ্বোধনী ফ্লাইটটি সকাল ১১.১৫ মিনিটে ২৩২ জন যাত্রী নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী এমপি বলেন, হজরত শাহজালাল ( রঃ ) স্মৃতি বিজড়িত পুণ্যভূমি সিলেটের অধিবাসীদের জন্য আজকের দিনটি আনন্দের। আজ তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এই সরাসরি ফ্লাইট সিলেটবাসী ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনার উপহার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারের জন্য সিলেটের মানুষের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সরাসরি এই বিমান যোগাযোগের ফলে দেশ প্রেমিক প্রবাসী ভাই-বোনদের সাথে দেশের যোগাযোগ আরও দৃঢ়, সহজ ও আরামদায়ক হবে।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রি শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে এখন আরও আধুনিক ও তারুণ্যদীপ্ত। তাঁর ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় জাতীয় পতাকাবাহী এই প্রতিষ্ঠানের বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭ (ড্রিম লাইনার), ৭৭৭ ও ৭৩৭ মডেলের বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ১২ টি উড়োজাহাজ। এই ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমরা কানাডা কর্মাসিয়াল কর্পোরেশন (সিসিসি) হতে স্বল্প পাল্লার ০৩ টি নতুন ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ ক্রয় করেছি। অচিরেই এই বিমানগুলো আমাদের বহরে সংযুক্ত হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আর্ন্তজাতিক এবং অভ্যন্তরীন অপারেশন এর পরিধি এবং ব্যাপ্তি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। নতুন গন্তব্য সংযোজন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আকাশের পঞ্চম স্বাধীনতা নিশ্চিত করে আমরা বিমান চলাচল চুক্তি সম্পাদন করেছি। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোন শহরে, যেকোন সংখ্যক বিমান চলাচল করতে পারবে। ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় অগ্রগতি। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ফ্লাইট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নির্ধারিত ক্যাটাগরি-১ অর্জনের কাজেও সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে এফ এ এ কর্তৃপক্ষ সরোজমিনে পরিদর্শন কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় তা অনলাইনে সম্পাদন করবে বলে তারা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই পরিদর্শন কাজ সম্পন্ন হলেই আমরা ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করতে পারব বলে আশাবাদী। এছাড়াও ঢাকা থেকে কানাডার টরেন্টোতে এবং জাপানের নারিতায় সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। খুব দ্রুতই আমরা এই দুই দেশে সরাসরি বিমান পরিচালনা শুরু করতে পারবো।
মাহবুব আলী বলেন, সরকার জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সত্যিকার অর্থে বিশ্বমানের একটি এয়ারলাইন্স হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুমাত্রিক নেতৃত্বে ও নির্দেশে বিমানের যাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষে কাজ করছি। তাঁর আগ্রহ, ঐকান্তিক ইচ্ছা, ও দূরদর্শী নেতৃত্বের স্পর্শে দ্রুত বিমান ও এভিয়েশন খাতের চিত্র বদলে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিমানের যাত্রী সেবা এখন পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় উন্নত ও আন্তরিক।