ঘূর্ণিঝড় ফণী ২০০ কিলোমিটার বেগে শুক্রবার আছড়ে পড়ে ওড়িশার পুরী উপকূলে। ফণীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশা, পুরী, কটক ও ভুবনেশ্বর শহর।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওড়িশায় ৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। ১১ লাখ মানুষকে সরাতে হয়েছে অন্যত্র। খাবার সরবরাহের জন্য খোলা হয়েছে ৫০০০ গণ রান্নাঘর। সকালে ওড়িশার গঞ্জাম, খুরদা, পুরী ও জগিসংহপুর জেলার উপকূলবর্তী অঞ্চলে ১.৫ মিটার পর্যন্ত উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দীঘা, মন্দারমণি ও মেদিনীপুরে। রাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয় কলকাতাসহ আশপাশের অঞ্চলে।
এদিকে ফণীর প্রভাবে সকাল থেকেই ঝড়ের দাপটে ফুঁসেছে সমুদ্র। বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে ওড়িশা উপকূলে। বাঁধ উপচে পুরীসহ উপকূলের শহরগুলোয় পানি ঢুকতে শুরু করে। নিচু এলাকাগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়ে। মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরীসহ ওড়িশার অন্তত ১১টি জেলা। বিদ্যুবিহীন হয়ে পড়ে গোটা পুরী। বহু কাঁচা বাড়ির চাল উড়ে যায়। প্রবল ঝড়ে উড়ে গেছে কারও কারও বাড়ি বা হোটেলের পানির ট্যাঙ্ক।
অতিভারী বৃষ্টিপাত চলছে পুরী, খুরদা, ভুবনেশ্বর এবং জগদীশপুরে। উপড়ে বা ভেঙে পড়া গাছ কেটে সরানোর কাজ শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। দুর্গতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আশ্রয়স্থলে। ভুবনেশ্বরে ভেঙে পড়েছে মোবাইল টাওয়ার। কটকে ভেঙে যায় রেল স্টেশনের ছাউনি। কোথাও আবার ঝড়ে উল্টে যায় বাস। ইতোমধ্যেই পানিতে ডুবে গেছে বহু জায়গা।
ফণীর তাণ্ডবে বড় আকারের ক্ষতি হয় ভুবনেশ্বরের এইমস ক্যাম্পাসে। তীব্র বাতাসে উড়ে যায় ভবনের ছাদের একাংশ। দুমড়ে-মুচড়ে যায় একাধিক পানির ট্যাঙ্ক। সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলেও নিরাপদে রয়েছেন হাসপাতালটির রোগীরা। সুরক্ষিত রয়েছেন ক্যাম্পাসের সব পড়ুয়া এবং হাসপাতাল কর্মীরাও। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের শুরুতে ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির শিকার হয় অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলাম অঞ্চল। বর্তমানে সেখানে উদ্ধার কাজ চলছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রথম ছোবলেই লণ্ডভণ্ড হয় পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর। বিকালে ঝড়ের দাপটে উড়ে যায় ১৫টি বাড়ির চাল। ভেঙে পড়ে গাছ, ল্যাম্প পোস্ট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যেই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।