বছর দুয়েক আগে বিশাল বরফের খণ্ড ভেঙে পড়েছিল আন্টার্কটিকায়। তখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কয়েক দিন আগেও অনেকটা বরফ গলে যাওয়ার খবর আসে মেরুপ্রদেশ থেকে। তবে এবার আরো ভয়বাহ খবর। ৩১ হাজার ৫০০ কোটি টন ওজনের একটি হিমশৈল ভেঙে পড়ল সমুদ্রে! বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত ৫০ বছরে এত বড় বরফখণ্ড একসঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়নি। যে বরফখণ্ডটি সমুদ্রে ভেঙে পড়েছে, তা ১ হাজার ৬৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছিলো। অর্থাৎ, প্রায় স্কটল্যান্ডের সমান এলাকা জোড়া ওই বিশাল বরফের খণ্ড ভেঙে পড়েছে আন্টার্কটিকায়।
ইউরোপ ও অ্যামেরিকার স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো একটা সময়ে ডি–২৮ নামের ওই বরফের টুকরো ভেঙে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আন্টার্কটিকার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত অ্যামেরি আইস সেল্ফ থেকে এটি পৃথক হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ করে নয়, গত দশ বছর ধরে এই ভাঙনের প্রক্রিয়া চলছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
মার্কিন হিমবাহ বিশারদ হেলেন আমান্ডা ফ্রিকার বলেন, ভারী তুষারপাতের কারণে অনেক সময়ে আইস সেল্ফের ওজন বেড়ে যায়। বাড়তে বাড়তে এক সময়ে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে, তা এভাবে ভেঙে পড়ে। তিনি জানান, ডি–২৮ নামের ওই হিমশৈলের ঘনত্ব প্রায় ২১৫ বর্গমিটার এবং সেখানে যতটা বরফ রয়েছে, তার মোট পরিমাণ প্রায় ৩১৫ বিলিয়ন টন!
অধ্যাপক ও গবেষক ফ্রিকার অবশ্য ২০০২ সালেই এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেছিলেন, আগামী ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এই আইস সেল্ফ সমুদ্রে হারিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমি এতো দিন অপেক্ষা করছিলাম, কবে এমনটা হবে। কারণ আমরা জানতাম, যে কোনো সময় এটা হতে পারে। এটা হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে, কিন্তু আটকানোর পথও আমাদের জানা নেই। বরফ নিজের নিয়মে পড়বেই, আর অ্যামেরি আইস সেল্ফ ভারী হতেই থাকবে।