এক দিকে পাহাড়, অন্য দিকে অবারিত ফেনিল সমুদ্র। সেই সমুদ্রের ঢেউ আছড়িয়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে, বিপরীত পাশে ধ্যানস্থ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি পাহাড়। এই দুই বিপরীতমুখী চঞ্চল ও অচঞ্চল প্রকৃতির বুক চিরিয়া ঋজুপথে বহিয়া গিয়াছে বিশাল একটি সড়ক। এরই নাম ‘মেরিন ড্রাইভ’ রোড।
এই সড়ক এক কথায় অনেক কিছু। পশ্চিমে নীল সাগরের ঢেউয়ের মাঝে পড়ন্ত বিকালে সূর্যাস্তের সময় পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনা আর আদিগন্ত নানা রঙের মেঘের খেলা যেন মনে করিয়ে দিতে পারে এক স্বপ্নময় যাত্রার কথা। এমনটি অতি কাল্পনিক মনে হলেও দীর্ঘদিন পর এখন স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে।
পর্যটন শিল্পের এক বিস্ময়কর নূতন দুয়ার খুলে যাচ্ছে এ মেরিন ড্রাইভ। আগামী ৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী হতে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কটির শুভ উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
কক্সবাজার জেলা শহরের কলাতলী হয়ে যে কোনো বাহনে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ হয়ে এক সময় পৌঁছানো যাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। মেরিন ড্রাইভের পথিমধ্যে সাগরের মাতাল হাওয়ার সহিত গাড়ির গতি যেন কানে কানে ফিসফিস করে শোনাবে নূতন কোনো অ্যাডভেঞ্চারের গল্প।
সেই অ্যাডভেঞ্চার-পথে হাতছানি দিবে বিশাল বিশাল সুপারিগাছ, সারি সারি ঝাউবাগান, বিচিত্র স্থাপনা আর ঝরনার নয়নাভিরাম দৃশ্য। মেরিন ড্রাইভের পাশে স্থাণুবত্ ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ে বিকালের সূর্যাস্তের রং গাঢ় হরিদ্রাভ হইয়া পর্যটকদের হূদয়ে ছড়াইয়া দিবে সপ্রাণ সবুজ আনন্দ। তাদের গাড়ির সহিত পাল্লা দিয়ে সাগরের ঢেউ ভেঙ্গে ছুটে চলবে লাল টুকটুকে সূর্য। এমনই স্বপ্নের যাত্রায় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা পান করবেন অভাবিত সৌন্দর্যসুধা।