সরকারের কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার মধ্যে ১৯ জুন’১৭ তারিখে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী এর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির পটভূমি বর্ণনা করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে, বাংলাদেশ সরকার রূপকল্প ২০২১ এর যথাযথ বাস্তাবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সুশাসন সংহতকরণে সচেষ্ট। এজন্য একটি কার্যকর, দক্ষ এবং গতিশীল প্রশাসনিক ব্যবস্থা একান্ত অপরিহার্য বলে সরকার মনে করে। এলক্ষ্যকে সামনেরেখে জাতীয় শুদ্ধা চার কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৮/১০/২০১২ তারিখে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে উক্ত কৌশল পত্র চূড়ান্ত ভাবে অনুমোদিত হয়। এ প্রেক্ষাপটে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য মূলত কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আওতাধীন দপ্তর/সংস্থাসমূহ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দপ্তর/সংস্থা প্রধানগণকে মন্ত্রী আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এই চুক্তির মাধ্যমে মূলত মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে পদ্ধতি নির্ভর থেকে ফলাফল নির্ভর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে সরকারি কর্মসম্পাদনের নিরপেক্ষ ও নৈর্ব্যক্তিক মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রীে আরও বলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মন্ত্রণালয় কী অর্জন করতে চায়, কীভাবে অর্জন করতে চায় এবং কার জন্য অর্জন করতে চায় অর্থাৎ এর সম্ভাব্য উপকার ভোগী কারা, সে সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের সার্বিক উন্নয়ন-অগ্রাধিকার, বিশেষত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, রূপকল্প ২০২১ এবং অন্যান্য কৌশলগত দলিলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের চুক্তি চূড়ান্ত করার পূর্বে এচুক্তির খসড়া প্রণয়ন করে সকল দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করে চুক্তির প্রথম খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। চুক্তির এ প্রথম খসড়া মন্ত্রি পরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৩/০৪/২০১৭ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণ করা হয়। উক্ত খসড়ার উপর ০২/০৫/২০১৭ তারিখে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কারিগরি কমিটির সভা হয়। কারিগরি কমিটি খসড়া চুক্তির উপর কতিপয় পর্যবেক্ষণ /সুপারিশ প্রেরণ করে। উক্ত পর্যবেক্ষণ/ সুপারিশ এর ভিত্তিতে সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন দপ্তর/ সংস্থার প্রধান গণের মতামত নিয়ে বিভাগের ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং তা ১১/০৬/ ২০১৭ তারিখে অনলাইনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দাখিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন রূপকল্প ২০২১ এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগামী এক দশকে এদেশে ক্ষুধা, বেকারত্ব, অশিক্ষা, বঞ্চনা ও দারিদ্র্য থাকবেনা। দেশে বিরাজ করবে সুখ, শান্তি, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি। সরকার বিশ্বাস করে যে, এই লক্ষ্যপূরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের অবশ্য কর্তব্য এবং সেই সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বার্ষিক কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। বর্তমান সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির ভিশন হচ্ছে সুখী সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সোনার বাংলা। আমাদের এটিই হল কাঙ্খিত গন্তব্য। সেই লক্ষ্যে পৌছানোর লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।