লিঙ্গ বৈষম্য থাকার সত্ত্বেও নারী স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মবাজারে সম্পৃক্ততার দিক দিয়ে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
‘বাংলাদেশে নির্বাচিত খাতসমূহে জেন্ডার ইক্যুইটি ডায়াগনস্টিক’ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এসব তথ্য তুলে ধরেছে। ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গর্ভনেন্স এন্ড ডেভলপমেন্ট (বিআইজিডি) এর সাথে যৌথভাবে এডিবি প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- অধিকাংশ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে। উদাহরণস্বরূপ ১৯৯০ সালে প্রতি দশ হাজারে মাতৃমৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৪৭২, ২০১৫ সালে সেটা কমে ১৪৩ এ দাঁড়িয়েছে। একইসাথে অনানুষ্ঠানিক বিদ্যালয়ে ২০১০ থেকে ২০১৩ তিন বছরের ব্যবধানে নারী শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ২১ থেকে বেড়ে ৪১ শতাংশ হয়েছে এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও গ্র্যাজুয়েশন পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ব্যবস্থায় নারী শিক্ষার্র্থীর সংখ্যা মাত্র ২৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার ঢাকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।এ উপলক্ষে আয়োজিত প্যানেল আলোচনায় নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম,অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা শারমিন বেনু,এডিবির আবাসিক প্রধান মনমোহন প্রকাশসহ অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদন বলা হয়-এডিবি সাহায্যপুষ্ট জেন্ডারভিত্তিক প্রকল্পসমূহের প্রধান চারটি খাত-দক্ষতা,কারিগরি ও তৃতীয় পর্যায়ের শিক্ষা,জ্বালানী,পরিবহন এবং নগর উন্নয়ন এগুলো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এখানে লিঙ্গ বৈষম্য রয়েছে।এই বৈষম্য কমাতে খাতভিত্তিক পৃথক কর্মকৌশল গ্রহণের সুপারিশ করে সংস্থাটি।
এডিবর মতে-নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ এবং ব্যয় সাশ্রয়ী পরিবহনের অভাব নারীদের কাজের সুযোগকে ব্যাহত করে। পাশাপাশি জ্বালানী পর্যাপ্ততাও নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ- নারীর স্বাস্থ্য, শিশুর লেখাপড়ার প্রয়োজনীয় আলো এবং জীবনযাত্রার সুযোগ নিরবিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্যের জ্বালানী সেবার ওপর নির্ভরশীল।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে এডিবির আবাসিক প্রধান মনমোহন প্রকাশ বলেন, আমরা আশা করি এই প্রতিবেদন বা প্রকাশনাটি কেবল এডিবির জন্য নয় বরং আমাদের অংশীদার সরকারি সংস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগিদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) লিঙ্গভিত্তিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। এছাড়া এটি নারী ও পুরুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন প্রসারে সহায়তা করবে।