চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহর থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতি এ ভাইরাস থেকে বাঁচতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় স্লোভেনিয়ায়ও চলছিল লকডাউন। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ২০ এপ্রিল থেকেই লকডাউন শিথিল করতে শুরু করে দেশটি।
ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম মহামারী করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ইতি ঘোষণা করল স্লোভেনিয়া। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ানেজ ইনশারের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বলা হয়, এখন থেকে স্লোভেনিয়াতে সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলবে।
বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের গণপরিবহন এমনকি স্লোভেনিয়ার রাজধানী লুবলিয়ানাতে অবস্থিত দেশটির একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইয়োজে পুচনিক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকেও ফ্লাইট চলাচলের ব্যাপারে এখন থেকে আর কোনও নিষেধাক্কা রইল না।
সব ধরনের বার, রেস্টুরেন্ট, কফিশপ ইতোমধ্যে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং আগামী সোমবার থেকে স্লোভেনিয়াতে এ করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল সেসব প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় চালু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনেক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানই আগামী সোমবার থেকে খুলতে যাচ্ছে।
এছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে প্রতিবেশি দেশ যেমন- ইতালি, অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং হাঙ্গেরির সঙ্গেও স্লোভেনিয়ার সীমান্ত সংযোগ পুনরায় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে চাইলে অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা স্লোভেনিয়ার রুট ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশের নাগরিক নন এমন কেউ যদি স্লোভেনিয়ায় প্রবেশ করেন তাহলে তাকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর নাগরিকদের ক্ষেত্রে এখানে কোনও বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় দেশটিতে বসবাসরত জনসাধারণের জীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এদিন সকালে এ ঘোষণার পর দেশটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অনেক নাগরিককে জড় হয়ে উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা গেছে।
তবে ইয়ানেজ ইনশার বলেছেন, পরিস্থিতি যতোই স্বাভাবিক হোক না কেনও এখনও শঙ্কা কিছুটা হলেও রয়ে গেছে এবং মানুষ যদি যথার্থ সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি মাথায় না রাখে তাহলে যে কোনও সময় দ্বিতীয় ধাপে গত শতাব্দীর প্যান্ডেমিক স্প্যানিশ ফ্লু এর মতো স্লোভেনিয়াতে আবারও করোনাভাইরাস হানা দিতে পারে। এছাড়াও তিনি তার ভাষণে এ পরিস্থিতিতে সকলকে এক হয়ে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।