ডিএমপি নিউজঃ ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়া শুধু আইন প্রয়োগ করে সড়কের শৃংখলা ফেরানো সম্ভব না। ধারণের অতিরিক্ত যানবাহন ও জনগণের আইন না মানার প্রবনতা ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার প্রধান সমস্যা।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখ বেলা ১২ টায় শাহবাগ মোড়ে অনুষ্ঠিত ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি’র সভাপতি প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবি’র প্রক্টর প্রফেসর গোলাম রব্বানী, বিশিষ্ট্য নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক শামছুল হক, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কাঞ্চন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি’র মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, বিশিষ্ট্য কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদসহ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের চার সদস্য।
ট্রাফিক সচেতনতা কর্মসূচি সম্পর্কে কমিশনার বলেন, সকল পেশার কর্মঘন্টা আছে , আমাদের কোন কর্মঘন্টা নেই। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৪-১৮ ঘন্টা পর্যন্ত সকল প্রাকৃতিক দূর্যোগ উপেক্ষা করে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্তরিক ধন্যবাদ। সড়কের শৃংখলা ফেরাতে তারা আমাদের পথ দেখিয়েছে। আমাদের বড় সমস্যা কেউ আইন মানতে চাই না। আইন না মানলে ট্রাফিক সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে না।
তিনি আরো বলেন, পুলিশের কোন সদস্য ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে তাকে একচুল ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশের প্রতিটি গাড়িতে ব্লু বুক ও বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা শহরে ১২১টি বাস স্টপেজে পুলিশের পক্ষ থেকে স্টপেজের চিহ্ন বসানো হয়েছে। রাস্তার বাম পাশ ঘেঁষে বাস দাঁড়াবে। বাস স্টপেজ ও বাস-বে তৈরির কাজ চলছে। রাস্তা পারাপারে পথচারীদেরও সচেতন হতে হবে। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার না হয়ে নির্ধারিত স্থান দিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হবে।
আসুন আমরা বদলে যাই বদলে দিই। সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক শৃংখলা ফেরাতে ট্রাফিক আইন মেনে চলি।
ঢাবি ভিসি বলেন, সড়কের বাস্তব নিরিখে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরী। সড়কের পর্যাপ্ত ফুটওভার ব্রীজ ও আন্ডারপাস নির্মাণ করে মানুষের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ অমানবিক কষ্ট করে কাজ করছে। এত সীমাবদ্ধতা থাকার পরও ট্রাফিক পুলিশের কাজকে ভূয়সী প্রসংশা করি। ট্রাফিক আইন মানতে আপনার আমার মাঝে চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে।
সড়কের শৃংখলা ফেরাতে পুলিশকে সর্বাত্ত্বক সহযোগিতা করার কথা বলে খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, আমরা দেখেছি চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। সমিতি থেকে চুক্তিভিত্তিক গাড়ি না চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। ডিএমপি যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সহযোগিতা করবে। শুধু পরিবহন মালিক-শ্রমিক সচেতন হলে হবে না, রাস্তা ব্যবহারকারীদেরও সচেতন হতে হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম, পিপিএম (বার), ইলিয়াছ কাঞ্চন, বিশিষ্ট্ নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক শামছুল হক, বিশিষ্ট্য কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস প্রমূখ।
এর পরপরই ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি উপলক্ষ্যে একটি সচেতনতা মূলক র্যালী হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রোভার স্কাউট, গার্লস গাউড, রেড ক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ নানান পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ট্রাফিক সচেতনতামূলক লিফলেট জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করা হয়।