ডিএমপি নিউজঃ কেরানীগঞ্জের বেউতা এলাকায় মালয়েশিয়া প্রবাসী আল-আমীনের বাড়িতে সাভারের ভাকুর্তা এলাকার কবিরাজ মফিজুর রহমানকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।। পরে লাশগুম করার লক্ষে ৮ থেকে ১০টুকরা করে স্থানীয় আক্তারের মাগুর মাছের খামারসহ বিভিন্নস্থানে ফেলে রাখে।
এ ঘটনায় মাকসুদা আক্তার লাকি, নজরুল ইসলাম নজু ও সালাউদ্দিন নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা জেলা দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশে। প্রথমে হাত-পা, মাথা বিহীন শরীর ও পরে মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোড়া, চাপাতি ও সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার ঢাকা জেলা দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশের কেরাণীগঞ্জস্থ কদমতলীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য প্রকাশ করেন গোয়েন্দা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান বলেন, সন্তান লাভের আশায় কেরানীগঞ্জের বেউতা এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী আল-আমীনের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার লাকির সাথে পরিচয় হয় ভাকুর্তা এলাকার স্বর্ণকার ও ভন্ড যাদুটোনাকারি চিকিৎসক কবিরাজ মফিজুর রহমানের সাথে। প্রতারক কবিরাজ লাকির গর্ভে সন্তান প্রদানের কথাবলে চাতুরতার আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নানা রকম আশ্বাস দিয়ে আসছিল। এরই মাঝে একপর্যায়ে সে লাকির সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এভাবে বেশ কিছুদিন চলারপর লাকি কবিরাজের প্রতারণা ও ভন্ডামী বুঝতে পারে। এরপর সে লোকলজ্জার ভয়ে কবিরাজের সান্নিধ্য থেকে সরে আসতে চাইলে কবিরাজ তাকে নানা রকমের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার ও পরিবারের ক্ষয়-ক্ষতি করার হুমকি প্রদান করে। একপর্যায়ে কবিরাজ লাকির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা সম্বলিত পোষ্টার ছাপিয়ে এলাকায় বিতরণ করে। বিষয়টি লাকির আত্মীয় স্বজন দেখতে পেয়ে তাকে জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে মফিজকে হত্যার পরিকল্পনা আটে। এ কাজে লাকি তার দু:সম্পর্কে দেবর নজরুল ইসলাম নজুর সাথে এক লাখ টাকার চুক্তি করে তাকে নগদ ২০ হাজার টাকা দেয়। এছাড়া লাকি তার আপন দেবর সালাউদ্দিনকেও বিষয়টি জানায়।
পরবর্তিতে গত ৩১ ডিসেম্বর তারা তিনজন মিলে পরিকল্পনা করে মফিজকে লাকির বাসায় ডেকে আনে। সেখানে লাকির সাথে রাত্রি যাপনের প্রলোভনে লাকি প্রথমে কবিরাজকে চায়ের সাথে ৪টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চা পান করায় এবং পরবর্তীতে রাতের খাবারের গরুর মাংসের তরকারিতেও ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়। এরপর মফিজ গভীরভাবে ঘুমিয়ে পরলে লাকি ও তার দুই দেবর সালাউদ্দিন ও নজু মিলে প্রথমে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে লাশগুম করার জন্য ১০টুকরা করে স্থানীয় আক্তারের মাগুর মাছের খামারসহ বিভিন্নস্থানে ফেলে রাখে। যা লোকমুখে সংবাদের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে হত-পা, মাথা বিহীন শরীর ও পরে মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেফতার করলে হত্যার প্রকৃত রহস্য বেড়িয়ে আসে।