ডিএমপি নিউজঃ আজ ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ছয় বছর পূর্তিতে নিহত দেশী-বিদেশীদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণে করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)।
শুক্রবার (১ জুলাই ২০২২) সকাল ১১ টায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে পুরাতন গুলশান থানার ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যে নিহতদের স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তিনি। এছাড়াও ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপিএম, পিপিএম (বার), এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, বিপিএম (বার) ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও এসবির মহাপরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম, বিপিএম(বার), পিপিএম(বার) সহ অন্যান্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিদেশি কূটনীতিগণ।
শ্রদ্ধা জানাতে এসে শহীদের স্মরণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) বলেন, হলি আর্টিজানের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরে যদি আমরা ঘুরে দাঁড়াতে না পারতাম তাহলে আজ যে পদ্মা সেতু দেখছি, মেট্রোরেল দেখছি তা কোন কিছুই বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে কোন বিদেশি টেকনিশিয়ান-ইঞ্জিনিয়ার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে আসত না।
তিনি আরও বলেন, নব্য জেএমবির সদস্যদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকলেও হলি আর্টিসানের ঘটনার পর ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিদের রুখে দিতে সক্ষম হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
২০১৬ সালের ১লা জুলাই আজকের এই দিনে গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারীতে সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ দেশী-বিদেশী ২২ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। এই সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে অকালে আত্মত্যাগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দুই নির্ভীক কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ রবিউল করিম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সালাহ উদ্দিন খান।
তাঁদের স্মরণে ও হলি আর্টিসান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে পুরাতন গুলশান থানার সামনে ২০১৮ সালের ১ জুলাই ‘দীপ্ত শপথ’নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার সর্ববৃহৎ এ ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই। সেদিন ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি সন্ত্রাসী দল উপস্থিত সাধারণ মানুষের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। সেদিন হলি আর্টিসান বেকারির ভেতরে হামলাকারীদের নৃশংসতার বলি হয় দেশী-বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিক। এদের প্রত্যেককেই কুপিয়ে জখম করে অথবা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মারা যায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, ১ জন বাংলাদেশি/আমেরিকান এবং ২ জন বাংলাদেশী নাগরিক। রাতভর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ অভিযানে উদ্ধার হওয়া জীবিত ৩২ জন। যার মধ্যে প্রথমে পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয় ২ জন বিদেশীসহ ১৯ জন, এরপর সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হয় দেশী বিদেশী মোট ১৩ জন।