প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাওরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের জন্য তার সরকার ইতিমধ্যে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পরবর্তী ফসল না উঠা পর্যন্ত কৃষিঋণ আদায় স্থগিত রেখেছে। এই সময়ের জন্য কৃষিঋণের সুদও মওকুফ করা হয়েছে। ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০ কেজি চাল এবং নগদ ৫ শত করে টাকাও প্রদান করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নেত্রকোনার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে খালিয়াজুরী কলেজ মাঠে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আপনারা যেমন হাওর পাড়ের মানুষ, আমি হাওর এলাকার, তাই আমি হাওরবাসির দুঃখ বুঝি। এজন্য বর্তমান সরকার হাওরবাসির জন্য সবরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, হত দরিদ্র মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজির যেমন চালের ব্যবস্থা করে দিয়েছি, তেমনি তার সরকার সরকার বিনা জামানতে কৃষকদের ঋণ সুবিধা পেতে ১০ টাকা জামানত দিয়ে ব্যাংকে একাউন্ট খোলারও সুযোগ করে দিয়েছি। কৃষিতে আমরা ভুর্তকি দিচ্ছি। এ কারণে কৃষকরা আজ সহজ লভ্যে কৃষি উপকরণ পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওর এলাকার শিক্ষার্থীরা যাতে স্কুলে যেতে পারে সেজন্য সেখানে আমরা ‘আবাসিক স্কুল’ করে দেবো। তিনি বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের আমরা বিনামূল্যে বই দিয়েছি। ১ কোটি ৭৩ লাখ শিক্ষার্থীকে আমরা উপবৃত্তি প্রদান করছি। আমরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতু চালু ছাড়াও স্বামী পরিত্যক্তাদের জন্যও ভাতা দিচ্ছি। ৭ লাখ ৫০ হাজার প্রতিবন্দীকেও ভাতা দিচ্ছি।
কেউ যাতে গৃহহীন না থাকে সে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেত্রকোনার খালিয়াজুরীসহ সকল উপজেলার কেউ যাতে গৃহহীন না থাকে তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি উপজেলার ভূমিহীনরা আশ্রয় পাবে, গৃহ পাবে। দেশের কেউ গৃহহীন থাকবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল- স্বাধীন বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় তখন আমরা সে ব্যবস্থা করবো।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে লুটপাট করে, আর বিরোধী দলে থাকলে মানুষ পুড়িয়ে মারে। বেগম খালেদা জিয়ার হুকুমে ২০১৩ সালে ওরা বায়তুল মোকাররমে শত শত পবিত্র কোরান শরীফ পুড়িয়েছে। বগুড়া মসজিদে কোরানপাঠরত অবস্থায় মুসল্লিকে কুপিয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়েছে,২৭১জনকে হত্যা করেছে ,৭০টি সরকারি অফিসে আগুন দিয়েছে ,৫৮২টি স্কুল পুড়িয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ড. মোহম্মদ মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এমপি বীরবিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি এবং পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী খাীরযাজুরী কলেজ মাঠে এবং নগর ইউনিয়নের বল্ভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বন্যাদুর্গতদের মাছে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।