ডিএমপি নিউজঃ হারিয়ে যাওয়া একটি শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) বেলা আনুমানিক ১২.০০ টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকা হতে প্রহর নামের একটি শিশুকে দু’জন দুর্বৃত্ত ডেকে নিয়ে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে অজ্ঞান করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যায়। তার বয়স ৮/৯ বছর। সে ৩য় শ্রেণীর ছাত্র।
অজ্ঞান অবস্থায় শিশুটিকে সারারাত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কাঁথা দিয়ে পেঁচিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। রাত তখন আনুমানিক ৪ টা দুষ্কৃতিকারীরা শিশুটিকে রেলস্টেশনে রেখে খাবার কিনতে যায়। সে সময় শিশুটির পাশে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি মুখ ধুচ্ছিল। মুখ ধোয়া পানির ছিটা শিশুটির চোখে মুখে গিয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক শিশুটি ঘুম থেকে জেগে উঠে কান্নাকাটি শুরু করে। লোকটি সিলেট থেকে আগত ট্রেনের যাত্রী একজন পুলিশ সদস্যকে ডাক দেয়। পুলিশ সদস্য শিশুটির নিকট গেলে সে আবোল তাবোল বলতে থাকে। একবার তার বাসা নারিন্দা আবার কেরানীগঞ্জ বলে।
এরপর তার পরিবারের খোঁজে পুলিশ সদস্য তাকে দয়াগঞ্জ মোড়ে নিয়ে আসে। তখন সময় প্রায় ভোর সাড়ে পাঁচটা। ঐ সময় সে স্থানে রাত্রিকালীন রাউন্ড ডিউটি করছিল ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল আমীন। পুলিশ সদস্যদের হেফাজতে থাকা শিশুটির সাথে দেখা হয় তাঁর। সবকিছু শুনে তিনি শিশুটিকে তার হেফাজতে নেন। অনেক্ষণ পর শিশুটি কিছুটা সুস্থ্ হয়ে উঠলে তার বাসা কোথায় জিজ্ঞাসা করলে একেক বার তার বাসা একেক জায়গায় বলতে থাকে। শিশুটিকে নিয়ে তার বাসার সন্ধান শুরু করেন তিনি। খুঁজতে-খুঁজতে নারিন্দা হলুদ মসজিদের পাশে ৯৪, শরৎগুপ্ত রোড লতিফা মজিদ মঞ্জিলের কাছে গেলে একজন মহিলা তাকে চিনতে পারে এবং বলে তার খালাতো বোনের বাসা এখানেই। শিশুটির খালাতো বোনের বাসায় গিয়ে জানা যায় তার বাসা কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায়।
তাদের কাছ থেকে শিশুটির মায়ের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন করে তাদেরকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আসতে বলে। এরপর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এর উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
হারিয়ে যাওয়া শিশুকে ফিরে পেয়ে তার বাবা-মা আবেগে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। তখন পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতায় তাদের আনন্দময় অশ্রুসিক্ত দু’চোখ জ্বল জ্বল করছিল।