নিজের ভুলের জন্য দীর্ঘ পাঁচটি বছর ছিলেন ক্রিকেট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ম্যাচ ফিক্সিং এর দায়ে আইসিসি তাকে সকল ধরণের ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করেছিল। কিন্তু হার মানেনি আশরাফুল । সম্প্রতিকালে ক্রিকেটে ফিরেছে একসময়ের মাঠ কাপানো এই তরুন ক্রিকেটার। দীর্ঘ নির্বাসিত সময় পার করেও হারাননি তাঁর হাতের জৌলস। তাইতো চলমান ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা তিনটি সেঞ্চুরি করে জানান দিয়েছেন নিজেকে। সে প্রস্তুত জাতীয় দলে ভিড়তে।
নিজের দল কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের প্রথম বিভাগে নেমে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ করা ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ অভিযানে তাঁর নামের পাশে পাঁচটি সেঞ্চুরি। এর শেষ তিনটি টানা তিন ম্যাচে। লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়ার পর এটি প্রিমিয়ার লিগের পঞ্চম আসর। এই আসরেই প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে করেছেন তিন তিনটি সেঞ্চুরি। পরে লিটন কুমার দাশ ও নাজমুল হোসেন (শান্ত) তাঁকে ছুঁয়ে ফেলতে না ফেলতেই আবার নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়ে থেমেছেন কাল। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে রেলিগেশন লিগের ম্যাচে তাঁর পঞ্চম সেঞ্চুরিটি অপরাজিত ১০২ রানের।
বহুকাল পর প্রিমিয়ার লিগ খেলতে নেমেই এতগুলো সেঞ্চুরি করা সত্ত্বেও নিন্দুকদের কাছে সেসব খুব পাত্তা পাচ্ছে না। এ জন্যই যে এর চারটিতেই যে তাঁর দল হেরেছে। তাঁদের বিপক্ষে আশরাফুলের সাবেক সতীর্থ শাহরিয়ার নাফীসই ব্যাট ধরলেন, ‘দল বাদ পড়ে গেছে কিন্তু সেই দলের একজন আজকের দিন পর্যন্ত লিগের সর্বোচ্চ স্কোরার। এটা অনেক বড় অর্জন।’ আসলেই তাই। ১৩ ম্যাচে ৫ সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৬৬.৫০ গড়ে লিগের সর্বোচ্চ ৬৬৫ রান গতকাল পর্যন্ত তাঁর ব্যাটে। আবাহনীর এনামুল হক (বিজয়) কিংবা আরো দু-একজন হয়তো অচিরেই তাঁকে টপকে যাবেন, কিন্তু ফিরে এসে এটি অন্তত জানান দিয়ে ফেলেছেন যে অনভ্যাসের মরিচাও ঝরিয়ে ফেলতে শুরু করেছেন একসময়ের ‘আশার ফুল’।
এই যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে আশরাফুলকে একসঙ্গে দুটি যুদ্ধ। কথার মালায় সেই দুটি যুদ্ধ এভাবেই গাঁথলেন কোচ জালাল, ‘ওর এখন দুটি যুদ্ধ। চলতি পথের চাহিদার সঙ্গে নিজের গা ভাসানো। প্রকৃতির সঙ্গেও একটা যুদ্ধ আছে। জাতীয় দলে ঢোকার জন্য যারা লড়ছে, তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আরেকটি প্রকৃতির সঙ্গে। শারীরিক গুণাগুণ ধরে রাখা। এখন যা আছে, সেটা ওই প্রতিযোগিতার জন্য যথেষ্ট নয়। সেটাও ওকে অর্জন করতে হবে। ওই আশরাফুলকে ওর ফিরে পেতে হবে। পুরোটা না হলেও ৮০ ভাগ ফিরে পেতে হবে।’