রাজধানীর ২০০টি হোটেল-রেস্তোরাঁর গুনগতমান যাচাই করে দেশে প্রথমবারের মতো হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর মান নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এই গ্রেড নির্ধারণের কাজটি করছে। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর ৫৭টি হোটেল-রেস্তোরাঁকে গ্রেডিং পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ-প্লাস পেয়েছে ১৮টি এবং এ-গ্রেড পেয়েছে ৩৯টি।
জানা গেছে, এ-প্লাস পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো উত্তমমানের এবং এ গ্রেড পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভালোমানের হোটেল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব হোটেলের সামনে ‘এ প্লাস’ হলে সবুজ, ‘এ’ হলে নীল, ‘বি’ হলে হলুদ এবং ‘সি’ হলে কমলা রংয়ের স্টিকার লাগানো থাকবে। কমলা রংয়ের স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে হোটেলটি অনিরাপদ। এই হোটেলকে এক মাসের মধ্যে মান ভালো করতে হবে। না হলে হোটেলের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। অন্যদিকে হলুদ স্টিকারধারী রেস্তোরাঁকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে তাদের মান ও গ্রেড উন্নত করতে হবে। অন্যথায় তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
গতকাল রবিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে এই গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তনের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক এবং বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতির মহাসচিব এম রেজাউল করিম সরকার রবিন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে। যেসব হোটেল-রেস্তোরাঁ ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর পাবে তারা ‘এ+’, স্কোর ৮০ এর ঊর্ধ্বে হলে ‘এ’, ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত স্কোর হলে ‘বি’ এবং ৪৫ থেকে ৫৫ স্কোর হলে ‘সি’ ক্যাটাগরির অর্ন্তভুক্ত হবে।
যারা রেস্তারাঁয় খাবার খেতে যাবেন- তারা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই জানতে পারবেন, এই হোটেল খাবারের জন্য কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, রান্নাঘরের অভ্যন্তরের পরিবেশ কেমন ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, গত বছর ২ এপ্রিল রাজধানীর পুরানা পল্টনের কস্তুরী হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করা হয়। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন, রামপুরাসহ কয়েকটি এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। পরবর্তীতে সারাদেশের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোকে গ্রেডিংয়ের আওতায় আনা হবে।
এ প্লাস পেল যারা: এ প্লাস গ্রেড পাওয়া রাজধানীর হোটেলগুলো হলো: পুরানা পল্টনস্থ ফারস্ হোটেল এন্ড রিসোর্টের দুটি শাখা, এশিয়া হোটেল এন্ড রিসোর্ট, কেএফসি, হোটেল কস্তুরি, হ্যান্ডি, নয়াপল্টনের ওয়েসটন রেস্টুরেন্ট, দিলকুশার হোটেল পূর্বানী ইন্টারন্যাশনাল, কাকরাইলের কিন্নরী রেস্টুেরেন্ট, গুলিস্তানের রাজধানী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, রামপুরার আল কাদেরিয়া ক্যাফে এবং বার্গার কিংয়ের বনানী, গুলশান-২, উত্তরা, মিরপুর, জগন্নাথপুর ভাটারা, যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমন্ডি শাখা।