রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ২০২১ সালে পদ্মাসেতু দিয়ে গাড়ির সাথে ট্রেনও চলাচল করবে। পদ্মারেল সংযোগ প্রকল্পের ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার অংশ ওই সময় চালু করা হবে। এছাড়া পুরো প্রকল্প ২০২৪ সালে ডিসেম্বরে শেষ হবে। আগামী অক্টোবরের ভারত থেকে ২০ লোকোমোটিব (ইঞ্জিন) আনা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রেলভবনের সভাকক্ষে সম্প্রতি ভারত ও চীনের সফরের অভিজ্ঞতা বিষয়ে সাংবাদিকের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় রেলওয়ে সচিব মো: মোফাজ্জেল হোসেন, মহাপরিচালক মো: শামছুজ্জামান সহ মন্ত্রণালয় এবং রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
এ সময় রেলপথ মন্ত্রী বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সংসদ সদস্য সহ প্রতিনিধিদলটি ভারতের বিভিন্ন কারখানা সহ বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করি। ভারত সফরে উভয় দেশের মধ্যে একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের রানিং টাইম কমিয়ে সপ্তাহে ৪ দিনের পরিবর্তে ৬ দিন হবে। বন্ধন এক্সপ্রেস ১ দিনের পরিবর্তে ২দিন চলাচল করবে। ভারত বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসাবে বিনা ভাড়ায় ১০ টি বিজি লোকোমোটিভ এবং ১০টি এমজি লোকোমোটিভ বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে। এছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়ার্কসপ সমূহের (সৈয়দপুর ও পাহাড়তলী কারখানা) আধুনিকীকরণ, বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদেরকে ভারতীয় রেলওয়েতে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থাসহ বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে অস্থায়ী কনটেইনার হ্যান্ডেলিং ইয়ার্ড স্থাপনের বিষয়ে ভারত আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
চীন সফরের বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আমি সহ অন্য আরেকটি প্রতিনিধি দল হাইস্পীড ট্রেন নির্মানের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিআরডিসি’র কর্তৃক বাংলাদেশে চলমান ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম ভায়া কুমিল্লা/লাকসাম দ্রুত গতির রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন’ প্রকল্পের অগ্রগতি জানার চেস্টা করি। দলটি সিআরআরটি বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করার। এই কোম্পানিটি লোকোমোটিভ ও রোলিং স্টক ম্যানুফেকচার করে থাকে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় রোলিং স্টক এই কোম্পানী থেকে সরবরাহ নেয়া হবে।
এছাড়া চীনের রেলওয়ের বিভিন্ন ডিপো পরিদর্শন করা হয়। চায়না রেলওয়ে এর চেয়ারম্যান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা, আধুনিকীকরণ ও বিদ্যমান লাইনের অপগ্রেডেশন, হাইস্পীড রেলওয়ে নির্মাণ, প্রযুক্তি, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে চীন বাংলাদেশ রেলওয়েকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় আমরা চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) কার্যালয় পরিদর্শন করি। এই কোম্পানী পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ছাদে ভ্রমন পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। কেউ যদি আইন অমান্য করে ট্রেন ছাদে ভ্রমন করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু রেলসেতু কাজ আগামী জানুয়ারি মাসে শুরু হবে।