তোয়াছিন ইসলাম সিমন। বয়স সবে চার বছর। ২৮ আগস্ট, ২০১৮ রাত পৌনে নয়টায় নিজেদের বাসায় আপন মনে খেলছিল সে। ঘড়ির কাঁটা তখন নয়টা ছুঁই ছুঁই। খোঁজ শুরু হয় সিমনের। কোথাও তার হদিস মিলছে না। তার বাবা মোঃ সাইফুল ইসলাম দারস্থ হন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ’র। ওই দিন রাতেই সিমনের নিঁখোজ সংক্রান্তে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়।
ওই জিডি’র ভিত্তিতে থানা পুলিশ সকল পন্থা অবলম্বন করে সিমনকে খুঁজতে থাকে। পরদিন ঘড়ির কাঁটায় দুপুর ০২.০৫ মিনিট। সিমনের বাবার মোবাইলে অজ্ঞাতনামা একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে। আশার বাণি শোনায় সে, জানায় সিমন তাদের কাছে আছে। কিন্তু শর্ত একটা ২০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। না হলে পড়বে ছেলের লাশ। কোন রকম চালাকি কিংবা থানা পুলিশের সাহায্য নিলেও সিমনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। কয়েকবার কথা বলার এক পর্যায়ে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে দফারফা হয়। সিমনের বাবা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান।
আজ ৩০ আগস্ট, ২০১৮ বৃহস্পতিবার বিকালে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম, পিপিএম নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পুলিশ অত্যন্ত সাবধানতার সাথে স্বল্প সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত ০১.৪৫ টায় তেঁজকুনি পাড়ার পীরমা মসজিদের গলি থেকে সিমনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। আর সেই সাথে গ্রেফতার করে অপহরণচক্রের দুইজনকে। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যমতে মহাখালী, মোহাম্মদপুর ও শেরেবাংলানগর এলাকা থেকে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের মধ্যে একজন নারী সহযোগী রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ রুমান মিয়া (১৮), মোঃ শহিদুল ইসলাম মানিক(১৮), মোঃ জিসান মিয়া (১৮), মোঃ সাইফুল ইসলাম ইমন(১৮), মোঃ আলী আহম্মেদ(১৮) ও মোসাঃ মীম আক্তার রিয়া(১৮)।
তিনি আরও জানান, ভিকটিমের পিতা সাইফুল ইসলাম এবং অপহরণকারীদের মধ্যে মধ্যস্থতা করে গ্রেফতারকৃত রুমান। এই রুমান মিয়া-ই অপহরণকারী দলের মূল হোতা। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম সিমনকে অপহরণ করার বিষয়টি স্বীকার করে। ভিকটিম ছোট শিশু হওয়ায় ঘুমের ঔষধ খাইয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়।
গ্রেফতারের সময় থানা পুলিশ ৫টি মোবাইল ফোনসেট ও ৬টি চাপাতি উদ্ধার করে।