ছোট্ট মেয়েটার আবদার একটা নতুন জামা। সেটা আর কত টাকাই হবে। কিন্তু ভিক্ষুক বাবার তো খাবার যোগাতেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। মেয়েকে নতুন জামা দেবেন কীভাবে? শিল্পপতি হোক কিংবা ভিক্ষুক- বাবা তো বাবাই। অবশেষে এক প্রতিজ্ঞা করলেন তিনি। শুরু করলেন টাকা জমানো। অবশেষে দীর্ঘ ২ বছর পর মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হলেন তিনি! অসংখ্য মানুষকে আবেগের জোয়ারে ভাসানো এই ঘটনাটি সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ১০ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় মুহাম্মদ কাওসার হোসেন নামের ওই ব্যক্তির ডান হাত কাটা পড়ে। এরপর থেকে কলকাতার ফুটপাতে বসে ভিক্ষা করেন তিনি। ছোট্ট মেয়েটাই তাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। ২ বছর ধরে টাকা জমিয়ে অবশেষে মেয়ের জন্য জামা কিনতে গেলেন শহরের এক দোকানে। দাম হিসেবে তিনি ৬০টি ৫ টাকার নোট তুলে দেন দোকানির হাতে। জামার দাম হিসেবে এতগুলো খুচরা টাকা দেখে দোকানদার কাওসারকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি ভিক্ষুক?
দোকানদারের প্রশ্ন শুনে কেঁদে ফেলে কাওসারের ৬ বছরের মেয়ে সুমাইয়া। বাবার হাত ধরে টেনে সে বলতে থাকে, ‘আমার কিচ্ছু চাই না। বাবা, তুমি চলো এখান থেকে। ‘ মেয়ের চোখের পানি মুছে দোকানদারকে শান্ত স্বরে কাওসার জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভিক্ষুক। ‘ এরপর মেয়ের পছন্দের হলুদ ফ্রক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন দোকান থেকে।
দুই বছর পর সুমাইয়ার জন্য কেনা একমাত্র নতুন জামা এটা। বাবার মনে তখন আনন্দ। দুই হাতে যে মেয়েকে জড়িয়ে ধরবেন, খোদা তাকে তো সেই সাধ্য দেননি। একটা হাত যে নেই কাওসারের! বাম হাত বাড়িয়ে শহরের বড় রাস্তার ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করেন তিনি। তবে মেয়েকে জামা কিনে দেওয়ার পর আনন্দে ওই দিন আর ভিক্ষা করেননি তিনি। মেয়ের সামনে মানুষের কাছে হাত পাততে লজ্জা লাগে তার। কিন্তু কী করবেন? জীবন তো থেমে থাকবে না।
সূত্র : এনডিটিভি