খবরটা ছড়ানোর পরই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল কলোরাডোর থরটন শহরে। অতি উৎসাহীদের ঠেকাতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হয় পুলিশকে। খবরটা কী? থরটনের একটি এলাকায় রাস্তা তৈরির কাজ চলছিল। মাটি খুঁড়তে খুঁড়তেই একটি বিরাট কঙ্কাল নজরে আসে কর্মীদের। খবর দেওয়া হয় প্রত্নতাত্ত্বিকদের। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানান, আসলে সেটি বিরল প্রজাতির ডাইনোসর ট্রাইসেরাটপসের জীবাশ্ম। এর বয়স প্রায় ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর।

প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, এখনও অবধি মাটি খুঁড়ে ওই প্রজাতির খর্গ এবং কাঁধের হাড় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সম্পূর্ণ জীবাশ্ম উদ্ধার হতে অনেকটা সময় লাগবে। থরটন পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া জীবাশ্ম পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যতটুকু জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে তার থেকে মনে করা হচ্ছে ওই প্রজাতির ট্রাইসেরাটপসটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩০ ফুট এবং উচ্চতায় ১০ ফুট। এরা শাকাহারী এবং ধীরগতিসম্পন্ন। আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি ৮০ লক্ষ বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষ পর্বে এই উদ্ভিদভোজী ডাইনোসরেরা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াত। শক্তপোক্ত কাঠামো এবং তিনটি খর্গের এই প্রজাতি দেখতে অনেকটা বর্তমান যুগের গন্ডারের মতো। সবচেয়ে আকর্ষণীয় এদের মস্তিষ্কের গঠন। খর্গ সমেত মস্তিষ্ক দৈর্ঘ্যে ৪ থেকে ৫ ফুট। হিংস্র মাংসাশী টিরানোসর রেক্সের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এই খর্গের ব্যবহার করত এরা।

এইরকমই দেখতে ছিল ক্রিটেসিয়াস যুগের ট্রাইসেরাটপস। প্রতীকী ছবি।

ডেনভার মিউজিয়াম অফ নেচার অ্যান্ড সায়েন্সের এক জন বিশেষজ্ঞ জো সেরিচ জানিয়েছেন, ট্রাইসেরাটপসের যে জীবাশ্মটি উদ্ধার হয়েছে সেটি আকৃতিতে অনেক ছোট। আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে এর আগে অনেক ট্রাইসেরাটপসের জীবাশ্ম উদ্ধার হয়েছিল। তাদের মধ্যে তিনটি এখনও মিউজিয়ামে রাখা আছে। বর্তমানে উদ্ধার হওয়া জীবাশ্মের মস্তিষ্কের গঠন অনেক স্পষ্ট। তার থেকে সহজেই ওই প্রজাতি সম্পর্কে আরও বিশদে জানা যাবে বলেই মনে করছেন তিনি।