শিক্ষা কারিকুলামে ৭১-এর গণহত্যা তুলে ধরা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ।
আজ সোমবার সকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ‘উচ্চশিক্ষা কারিকুলামে ৭১-এর গণহত্যা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির এবং পাকিস্তানের দুইজন গবেষক আনাম জাকারিয়া ও হারুন খালিদ এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
ড. হারুন আরো বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা মানব জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় ঘটনা। এ ঘটনা নতুন প্রজন্মকে জানাতে শিক্ষা কারিকুলামে তুলে ধরার সকল উদ্যোগ নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, একাত্তরে পাক বাহিনীর হাতে ৩০ লক্ষ বাঙালি ঐ নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের শিকার হন। ৩ লক্ষ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারান। আর ১ কোটি গৃহহারা মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য বাঙালি জাতির নজিরবিহীন আত্মত্যাগ ও পাকিস্তানী বাহিনীর এই বর্বর গণহত্যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে শিক্ষা কারিকুলামে সঠিক চিত্র গুরুত্ব সহকারে অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। সেটি মনে রেখেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা কারিকুলামে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ শীর্ষক একটি পূর্ণ কোর্স সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্য পাঠ্য করা হয়েছে।”সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাতে এ সকল তথ্য জানা যায়।
শাহরিয়ার কবির বলেন, “ যে-কোনো সংজ্ঞা বিচারে ৭১-এ পাকিস্তানি বাহিনীর নির্বিচার বাঙালি হত্যা ছিল একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার হত্যাকান্ড- বা জোনোসাইড। পাকিস্তানের উচিত ছিল বহু আগেই এজন্য বাঙালিদের নিকট নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া।”
পাকিস্তানি দুই গবেষক আনাম জাকারিয়া ও হারুন খালিদ বলেন, ৭১-এ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাকান্ড- ছিল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। কোনো অবস্থাই কোনো মানুষ অপর কোনো মানুষের ওপর এরূপ হত্যাকান্ড- চালাতে পারে না”।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ৭১-এর গণহত্যার ওপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য প্রফেসর ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, প্রফেসর নোমান উর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।