কোন দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত হল ওই দেশের সামাজিক ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং উন্নত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। উন্নত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটি জাতির শান্তিপ্রিয়তা ও সু-সভ্যতার বহিঃপ্রকাশ। For Better and Safer Dhaka মূলমন্ত্রকে ধারণ করে ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় দায়িত্ব পালনকারী কমিশনার জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম(বার), পিপিএম এর গতিশীল নেতৃত্বে সদা তৎপর ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ’। তার সুদক্ষ দিক নির্দেশনা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সম্মিলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৪ হাজার সদস্য অপরাধ নির্মূল, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমুজ্জল। বর্তমানে মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর প্রত্যেক থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জনগণের প্রত্যাশা ও নির্ভরতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ, মহিলা ও অসহায়দের হয়রানি, নির্যাতন ও অপরাধের শিকার হতে রক্ষা এবং প্রত্যেক নাগরিকের মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে নিজ নিজ অর্পিত বিধিবদ্ধ দায়িত্ব নিবেদিতভাবে পালনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি সদস্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শান্তি ও নিরাপত্তা উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রণয়নে সম্মানিত নগরবাসীর আকাংখার প্রতিফলন সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
জনসম্পৃক্ততায় বিট পুলিশিং ব্যবস্থার প্রবর্তনঃ তিনি ঢাকা মহানগরীতে পুলিশ ও নাগরিকদের কার্যকর মেলবন্ধন ঘটিয়ে জনবান্ধব বিট পুলিশিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছেন। মহানগরীর ব্যস্ত এবং বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং নানা অঞ্চল, শ্রেণী, পেশার বসবাস বিবেচনায় বিট পুলিশিং-এর মাধ্যমে পুলিশের সেবা কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর করা তথা জনবান্ধব পুলিশিং বাস্তবায়ন করাকে অন্যতম লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। ঢাকা মহানগর এলাকায় বর্তমানে ৩০২টি বিট কার্যকর আছে। বিট অফিসারগণ প্রধানতঃ দু’টি কাজ করে আসছেন। প্রথমতঃ তথ্য সংগ্রহ, দ্বিতীয়তঃ জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি। তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রমের ফলে প্রতিটি এলাকা, এলাকার অপরাধ ও অপরাধী, এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বসবাসকারীদের কৌশলগত অবস্থান এবং এলাকাবাসী সম্পর্কে তথ্যভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। এতে করে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট অপরাধী সনাক্ত করা সহজতর হবে এবং অপরাধ দমন ও উদঘাটনে পুলিশের রেসপন্স টাইম কমে আসবে।
উঠান বৈঠকঃ তার সৃজনশীল পরিকল্পনায় জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জনগণের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের কাজের সফলতার জন্য পুলিশভীতি ও অপরাধভীতি দূর করা। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে জনগণের সাথে প্রতিনিয়ত মিথস্ক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। উঠান বৈঠকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিক এবং চলমান অপরাধ প্রতিরোধ, মাদক প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য ব্যবস্থাপনাঃ ভাড়াটিয়া তথ্য নিবন্ধনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে Citizen Information Management System(CIMS) সফটওয়ারের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৭০ লক্ষ অধিক নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। সংগৃহীত তথ্য দ্বারা অপরাধীদের সনাক্ত করণ, গুরুত্বপূর্ণ ও ক্লু-লেস অপরাধ উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার সম্ভব হয়েছে। ফলে ঢাকা মহানগরীতে অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের CIMS ব্যবস্থাপনা দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রসংশিত ও সমাদৃত হয়েছে।
নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহঃ আরও অধিক সংখ্যক নাগরিক তথ্য সংগ্রহ এবং তা CIMS -এ এন্ট্রির মাধ্যমে অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে একটি পরিপূর্ণ তথ্য ভান্ডার সৃষ্টির জন্য তার নির্দেশনা মোতাবেক ঢাকা মহানগর এলাকায় ১৫-৬-২০১৯ হতে ৩০-০৬-২০১৯ তারিখ পর্যন্ত ‘‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ ২০১৯ উদ্যাপন করা হয়। প্রতিটি বিটে ব্যাপক গণসংযোগের মাধ্যমে নতুন ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সঠিক তদারকির মাধ্যমে CIMS প্রক্রিয়াকে আরো গতিশীল ও তথ্য নির্ভর করার জন্য নির্ভুল তথ্য এবং পরিপূর্ণ ডাটা এন্ট্রি (স্ত্রী, সন্তান, গৃহকর্মী, ড্রাইভারদের তথ্যসহ) প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক নিমূর্লসহ আরো অন্যান্য অপরাধ কার্যক্রম প্রতিরোধকল্পে CIMS-কে কার্যকরী করা ছিলো তার একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত।
৯২ দিন ব্যাপী অগ্নিসন্ত্রাস দমনঃ জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম(বার), পিপিএম ২০১৫ সালে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের অব্যবহিত পরই কতিপয় কুচক্রী মহল অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রচেষ্টা চালায়। অপরাজনৈতিক শক্তি ৯২ দিন ব্যাপী অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালায়। তিনি অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতামূলক কর্মকান্ড অত্যন্ত পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করেন। নাশকতাকারীদের আইনের আওতায় আনাসহ স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে জনমনে প্রশান্তি ও নিরাপদ পরিস্থিতি বজায় রাখার ব্যবস্থা করেন।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনঃ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১৫ এবং ঢাকা মহানগরীতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ তার নেতৃত্বে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করা হয়। তার তত্বাবধানে উর্ধ্বতন অফিসারগণ সার্বক্ষণিক নির্বাচনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকী করার নির্দেশনা প্রদান করার কারণে সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে ১৬টি সংসদীয় আসনে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা, নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ, ভোটারদের মনে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য তিনি ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনঃ প্রচলিত কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে চাকুরী প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে আন্দোলন চালায়। এপ্রিলে এই আন্দোলনের ব্যাপকতা সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাস্তায় নেমে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুর করে। তাঁর যথাযথ পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার প্রয়োগে ঢাকা মহানগরীর সর্বত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কোটা আন্দোলনকারীদের জনবিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসাত্মক কার্যাবলী প্রতিরোধপূর্বক জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনঃ মহানগরীতে বাসের ধাক্কায় দু’জন শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দাবিতে কোমলমতি ছাত্ররা ২৯ জুলাই ২০১৮ হতে রাজপথে আন্দোলনে নামে। তার সক্রিয় নির্দেশনায় ডিএমপি কোমলমতি ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনকে শুরুতেই প্রতিহত না করে বরং তাদের সাথে একাত্মতা প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে কোমলমতি ছাত্রদের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে একদল স্বার্থান্বেষী মহল বিপুলসংখ্যক গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহবাগে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, মিরপুর পুলিশ লাইনস্, কাফরুল থানাসহ রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশের উপরও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। তার বুদ্ধিদীপ্ত দূরদর্শিতা এবং চৌকস দিকনির্দেশনার কারণে ডিএমপি সদস্যগণ এ আন্দোলন চলাকালীন কোন ধরণের প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগ না করেই ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন অত্যন্ত ধৈর্য্য, আন্তরিকতা ও সংবেদনশীলতার সাথে মোকাবেলা সম্ভব হয়েছে।
ভ্যাট আন্দোলনঃ একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে রাজস্ব হতে আহরণ। রাজস্ব আহরণের অন্যতম মাধ্যম হলো ভ্যাট। সরকার কর্তৃক যৌক্তিক হারে ভ্যাট নির্ধারণ করা হলে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী ও স্বার্থান্বেষী মহল ভ্যাট নির্ধারণকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রতি এক ধরণের চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে কার্যকর ভ্যাট হারকে প্রত্যাহার করার অপকৌশলে লিপ্ত হয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অন্তরায় সৃষ্টি করতে চায়। ঢাকা মহানগরীতে ভ্যাট নিয়ে আন্দোলন চলাকালীন তিনি ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সাথে আন্দোলনকারীদের নিবৃত্ত করেন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টঃ তার গতিশীল নেতৃত্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত IPU, CPA পানি বিষয়ক সম্মেলনসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট, বিভিন্ন International Sports, Classical Festival, Folk Festival, Cultural Event, মান্যবর পোপ এবং সৌদী মান্যবর গ্র্যান্ড মুফতী মহোদয়গণের বাংলাদেশ সফরকারীন বিশ্বমানের নিরাপত্তা প্রদান বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
কূটনৈতিক ও বিদেশীদের আস্থা অর্জনঃ ২০১৬ সালে গুলশানস্থ হলি আর্টিজান বেকারীতে বিদেশী নাগরিকদের হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনৈতিক, বিদেশী নাগরিক, বিনিয়োগকারীদের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে তিনি নিরাপত্তা পরিকল্পনা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে টেকসই নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করায় কূটনৈতিক এবং বিদেশীদের মধ্যে আস্থা এবং বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজমান।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণঃ তার সক্রিয় তত্ত্বাবধানে ডিএমপি সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগ সোশ্যাল মিডিয়া এবং সাইবার কেন্দ্রিক প্রপাগান্ডা, হুমকি, ওয়েব সাইট হ্যাকিং, অপরাধের ক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীকে সনাক্তকরতঃ আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।
City Surveillance: ঢাকা মহানগরীকে নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে বসবাসের যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার কর্মযজ্ঞের অন্যতম দৃষ্টান্ত হচ্ছে সমগ্র ঢাকা মহানগরীকে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের অধীনে নিয়ে আসা। সেলক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আব্দুলগণি রোডের সেন্ট্রাল কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টারসহ রাজধানীর অন্যান্য কয়েকটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে স্থাপিত সকল সিসি টিভিকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়। উক্ত ব্যবস্থায় ঢাকা মহানগর এলাকার যে কোন ধরণের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে দুস্কৃতিকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এলাকায় LOCC প্রকল্প এবং সারা মহানগরীতে বিভিন্নভাবে উন্নত প্রযুক্তির বিপুল পরিমাণ CCTV স্থাপন করা হয়েছে। ফলে অপরাধী এবং যানবাহনের অবস্থান সনাক্তকরণ এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে।
চরমপন্থা ও জঙ্গীবাদ বিরোধী কার্যক্রমঃ ২০১৬ সালে হলি আর্টিসান বেকারিতে নৃশংস ও মর্মান্তিক সন্ত্রাসী ঘটনার পর তার নেতৃত্বে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট একের পর এক অভিযানে চিহ্নিত ও আত্মস্বীকৃত চরমপন্থী ও জঙ্গীদের নির্মূলের মাধ্যমে চরমপন্থা ও জঙ্গীবাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে।
হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় তিনি একমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে ঘটনাস্থলের একদম সন্নিকটে শারীরিকভাবে উপস্থিত ছিলেন। তার সাথে দায়িত্ব পালনরত এসি রবিউল ও বনানী থানার সাবেক ওসি সালাহউদ্দিন আত্মাহুতি দেন। তিনি হলি আর্টিসান হামলার অন্যতম সারভাইভার।
Team DMP Spirit: তার সুদক্ষ পরিচালনায় “ Team DMP Spirit”-এর মাধ্যমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৪ হাজার সদস্য পারস্পরিক ঐক্য, সংহতি, সহনশীলতা, পেশাদারিত্ব ও সহমর্মিতার এক অনন্য নজীর স্থাপন করে চলেছে। ফলশ্রুতিতে নাগরিক জীবন হয়েছে সংঘাতহীন, নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত। জননিরাপত্তা হয়েছে টেকসই ও কার্যকর। জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে Proactive জনবান্ধব টেকসই পুলিশি সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “টিম ডিএমপি”-এর অহর্নিশি প্রয়াসের প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ ঢাকা মহানগরীতে অপরাধ প্রবণতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ডিএমপি’র প্রায় সকল কার্যক্রম সুযোগ্য কমিশনার এর পৃষ্ঠপোষকতা, সময়োপযোগী সুপরামর্শ ও দিক-নির্দেশনার কারণে ডিজিটালাইজড হয়েছে। ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অফিস অটোমেশন সিস্টেম, পে-রোল ম্যানেজমেন্ট, সিটি সারভিলেন্স সিস্টেম, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম, সিআইএমএস, এসআইভিএস, ভেহিক্যাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যার-এর মত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী/অপরাধী সম্পর্কিত তথ্য প্রাপ্তির জন্য Hello CT অ্যাপস চালু করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনপূর্বক আব্দুল গণি রোডের কমান্ড কন্ট্রোল সেন্টারসহ অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া ডিএমপি’র অব্যাহত প্রণোদনা, তদারকী এবং সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরী এলাকায় অপরাধ প্রবণতা হ্রাসের পাশাপাশি সংঘটিত অপরাধ সহজেই সনাক্তকরণ সম্ভব হচ্ছে।
জন-শৃঙ্খলা রক্ষাঃ তার সুযোগ্য ও যুগোপযোগী নেতৃত্বের কারণে জাতীয় বিভিন্ন দিবস/কর্মসূচী যেমন: ইংরেজি নববর্ষ, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, বিশ্ব ইজতেমা, বই মেলা, অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, বাংলা নববর্ষ, মে দিবস, মাহে রমজান, ঈদ-উল ফিতর, ঈদ-উল আযহা, তাজিয়া মিছিল, দুর্গাপূজা, বৌদ্ধ পূর্ণিমা, বিজয় দিবস, বড়দিন, ফোক ফেস্ট, লিট ফেস্ট, থার্টি ফার্স্ট নাইটসহ সকল জাতীয় উৎসব অনুষ্ঠানে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদান করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। উৎসবমুখর পরিবেশে লাখ লাখ নারী পুরুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি উৎসব প্রাণের মেলায় পরিণত হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিশ্বমানের হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভাঃ তার নির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জঙ্গীবাদসৃষ্ট সমস্যা নিয়ন্ত্রণ তথা নিরসনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ হতে এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপট নির্মাণের লক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবকদের সমন্বয়ে জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
থানার সেবার মানোন্নয়নঃ পুলিশি কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু থানায় সেবার মানোন্নয়নের জন্য ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অহেতুক গ্রেফতার এবং মোবাইল গাড়িতে তুলে হয়রানি করা, কার্যবিধি ৫৪ ধারায় গ্রেফতার এবং ডিএমপি অর্ডিন্যান্সে গ্রেফতার করার ঘটনা কমে আসছে। থানা পর্যায়ে ব্যাপক ভিত্তিক ডিজিটাইজেশন এর কার্যক্রমও চলমান আছে। তদন্ত কার্যক্রমের সুষ্ঠু ও গতিশীল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ক্রিমিনাল ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CDMS) এর প্রাত্যহিক হালনাগাদ কার্যক্রম তদারকি করা হচ্ছে। ডিএমপি’র সকল থানায় পর্যায়ক্রমে স্থাপিত হচ্ছে নারী ও শিশু বান্ধব হেল্প ডেক্স।
থানায় সাধারণ ডায়েরি ফর্ম (জিডি ফর্ম) সরবরাহঃ থানায় সাধারণ ডায়েরি প্রক্রিয়া সহজতরকরণ এবং সাধারণ ডায়েরি করতে নাগরিকদের হয়রানি না হওয়ার লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটি থানায় নির্দিষ্ট ফরম্যাট অনুযায়ী সাধারণ ডায়েরি ফর্ম বই আকারে সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে সেবাপ্রত্যাশীগণ খুব সহজেই থানায় ছাপানো ফর্মে সাধারণ ডায়েরি করতে পারছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক নাগরিকদের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যা একটি অনন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
অপরাধ প্রবণতা হ্রাসঃ জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে চৎড়ধপঃরাব জনবান্ধব টেকসই পুলিশি সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “টিম ডিএমপি”-এর অহর্নিশি প্রয়াসের প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ ঢাকা মহানগরীতে অপরাধ প্রবণতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। অপরাধ বিভাগে ১৬টি জোনকে পুনর্বিন্যস্ত করে ২৪টি জোন গঠন এবং জোনভিত্তিক এডিসি ও এসি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদায়নপূর্বক মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের তদারকি বৃদ্ধির মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের কার্যকরভাবে চেকপোস্ট, মোবাইল প্যাট্রল, ব্লক রেইড কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অপরাধীদের নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। ফলে ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে অন্যান্য যে কোন সময়ের তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রিত রয়েছে।
মামলার যথাযথ তদন্ত নিষ্পত্তিঃ ঢাকা মহানগরীতে গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর মামলা সমূহের তদন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অসংখ্য মামলার বস্তুনিষ্ঠ এবং মানসম্পন্ন তদন্ত যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অপরাধ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ, তদারকী, পর্যালোচনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার দিক-নির্দেশনামূলক পরামর্শ, সার্বক্ষণিক ও নিবিড় তদারকীর কারণে অনেক চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতার করা সহজতর ও সম্ভবপর হয়েছে।
মাদক নির্মূল ও মাদকের বিস্তার রোধ এবং মাদকসেবীদের পুনর্বাসনঃ বাংলাদেশ পুলিশের প্রাধিকারভুক্ত কার্যক্রমসমূহের মধ্যে মাদক নির্মূল ও মাদকের বিস্তার রোধ অন্যতম। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদক, জঙ্গীবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন। উক্ত ঘোষণা বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসূ করার নিমিত্তে তার দিক-নির্দেশনামূলক পরামর্শ, সার্বক্ষণিক ও নিবিড় তদারকীর কারণে বিপুল সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এছাড়াও ঢাকা মহানগর এলাকায় “সু-পথে ফেরা” কর্মসূচীর মাধ্যমে মাদকসেবীদের পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বনানী সাততলা বস্তিতে মাদক আখড়া ভেঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার।
অবৈধ অস্ত্র/বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার ও মামলাঃ অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে তার কর্মপরিকল্পনা ও কৌশল অনুযায়ী ব্লকরেইড পরিচালনা, বিশেষ অভিযান পরিচালনা ও নানামুখী পদক্ষেপের কারণে অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য।
চোরাই গাড়ি উদ্ধারঃ চোরাই গাড়ি উদ্ধারের ক্ষেত্রে তার দিক-নির্দেশনা ও নানামুখী পদক্ষেপের কারণে ২০১৮ সালে উদ্ধার করা হয়েছে ১২৬টি প্রাইভেটকার, ১৩টি মাইক্রোবাস, ২৭৬টি মোটর সাইকেল, ৫০টি সিএনজি, ২৪টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৪৬টি জিপ/পিকআপ, ১টি ট্রাক্সি ক্যাব, ৭টি টেম্পু/লেগুনা, ২৪টি বাসসহ সর্বমোট ৫৬৭টি চোরাই গাড়ী।
সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাঃ ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন ও ট্রাফিক শৃঙ্খলা নিশ্চিতের লক্ষ্যে তার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে প্রণীত নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। উল্টো পথে চলাচলকারী যানবাহন, মোটর সাইকেলে ০২ জন এর বেশী আরোহণ, হেলমেট বিহীন এবং ফুটপাতে মোটর সাইকেল চালানোসহ ট্রাফিক আইনভঙ্গকারী সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বাস/লঞ্চ টার্মিনাল, মার্কেট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ডকুমেন্টারী প্রদর্শন ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী, পথচারী ও জনসাধারণকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রতি সচেতন করা হচ্ছে।
নারী সার্জেন্টরা রাস্তায় পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। নির্ধারিত স্থানে বাস থামার জন্য ১২১টি স্থানে ‘বাস স্টপেজ শুরু’ও বাস ‘স্টপেজ শেষ’ সাইনবোর্ড স্থাপন ও সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে ৬০টি স্থানে অনস্ট্রিট পার্কিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রতিটি পেট্রোল পাম্পে `No Helmet-No Fuel’ ব্যবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহীগণ হেলমেট ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। ট্রাফিক গাইড বুক প্রকাশনা পূর্বক বিতরণ করা হয়েছে। Radia Masala Spice FM ৯৬.৪ চ্যানেলের মাধ্যমে ৩০ মিনিট বিরতিতে ট্রাফিক আপডেট সম্প্রচার করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে ট্রাফিক সপ্তাহ, ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং ট্রাফিক-শৃঙ্খলা সপ্তাহ পালন করা হয়। রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্ল গাইডস্, বিএনসিসি সদস্যরা সড়ক নিরাপত্তা বিধানে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ঢাকা মহানগরীতে যানজট সমস্যা সমাধানকল্পে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিট এর কাজ। CASE প্রকল্প কর্তৃক গৃহীত ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট মেনে যানবাহন চলাচলের প্রক্রিয়াও দ্রুতগতিতে চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এই প্রকল্পগুলো শেষ হলে ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা আর থাকবে না।
অবকাঠামোগত উন্নয়নঃ পুলিশি কার্যক্রমের দৃশ্যমান বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসূ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে অবকাঠামোবগত উন্নয়ন একটি অপরিহার্য বিষয়। তার সুদূরপ্রসারি চিন্তা ও চেতনার ফসল হিসেবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্-এ নান্দনিক গেট, পূর্বাচল পুলিশ লাইনস এবং তুরাগ পুলিশ লাইনস-এর কার্যক্রম, ডেমরা, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও শেরে বাংরা নগর থানা ভবন উদ্বোধন হয়েছে। উত্তরখান, দক্ষিণখান, সবুজবাগ, গুলশান, গেন্ডারিয়া, তুরাগ, লালবাগ, ডেমরা থানা ভবন, ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ১২ তলা অফিস ভবন, পিওএম পুলিশ লাইনস্-এ ২০ তলা ব্যারাক ভবন, ২০ তলা আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ চলমান রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইন্স, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মুগদা, তুরাগ, সবুজবাগ, চকবাজার, কাফরুল, ভাষানটেক, বাড্ডা, কদমতলী, রামপুরা, চকবাজার, ওয়ারী, হাতিরঝিল থানা’র জমি অধিগ্রহণ/বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
নতুন জনবল সংযোজনঃ পুলিশের সাংগঠনিক জনশক্তি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি নতুন জনবল সংযোজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য বিভিন্ন পদ মঞ্জুরীর মাধ্যমে নতুন ইউনিটসমূহের কার্যক্রম শুরু করেন। গোয়েন্দা ইউনিটে নূতন বিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগে নতুন জোন সৃষ্টিপূর্বক বেশী সংখ্যক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার নিয়োজিতকরণের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে তদারকি আরও নিবিড় এবং দৃশ্যমান করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবহন পুলের যানবাহনসমূহকে যথাযথ কার্যকর এবং গতিশীল করার লক্ষ্যে পরিবহন ও ওয়ার্কশপ নামে ২টি বিভাগ গঠন করা হয়েছে।
যানবাহন সংযোজনঃ পুলিশের মবিলিটি এবং ফোর্সদের যথাযথভাবে দায়িত্বে নিয়োজিতকরণ নিশ্চিতের মাধ্যমে অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসেবে বিদ্যমান যানবাহন সমস্যা নিরসনকল্পে তিনি যানবাহন সংযোজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধরণের গাড়ি ও বিভিন্ন ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবলিটির আওতায় বিভিন্ন ধরণের যানবাহন সংগ্রহ করা হয়েছে। একটি প্রাসঙ্গিক গ্রহণযোগ্য রেকার ব্যবস্থাপনা নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারী মালিকানাধীন রেকার পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারপূর্বক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিজস্ব রেকার পর্যায়ক্রমে ঢাকা মহানগরীতে নিয়োজিত করা হচ্ছে।
রিক্যুইজিশন প্রথা বন্ধকরণঃ তিনি ঢাকা মহানগরীতে সম্মানিত নাগরিকরা যাতে কোন ধরণের হয়রানির শিকার না হন সেজন্য রিক্যুইজিশন প্রথা বন্ধ করার যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
ক্রয়কৃত আধুনিক যন্ত্রপাতিঃ একটি আধুনিক ও পেশাদার পুলিশ বাহিনী গঠন, জনগণের কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণ এবং ফলপ্রসূ পুলিশিং ব্যবস্থা কার্যকরের লক্ষ্যে আধনিক যন্ত্রপাতির কোন বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে তিনি আধুনিক যন্ত্রপাতি বিধি মোতাবকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ক্রয়ের ব্যবস্থা করেন।
কেন্দ্রিয় ফোর্স ম্যানেজমেন্টঃ তিনি কেন্দ্রিয় ফোর্স ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে প্রচলিত ফোর্স ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে ০২ শিফট এর পরিবর্তে ০৩ শিফট ভিত্তিক ফোর্স মোতায়েনের প্রচলন করেন। যা পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে গৃহীত অনন্য ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আইন-শৃঙ্খলা সহ অন্যান্য ডিউটিতে ফোর্সের প্রকৃত চাহিদা নিরূপণের মাধ্যমে ফোর্স মোতায়েনে অপচয় রোধপূর্বক ফোর্সের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি ডিউটির গুণগত মান বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মানব সম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনাঃ ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরত সকল স্তরের সদস্যদের একজন আধুনিক, দক্ষ ও পেশাদার পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রমকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। প্লানিং, রিসার্চ এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মাধ্যমে অফিসার/সদস্যগণকে দক্ষ, কৌশলী, জনবান্ধব ও যুগোপযোগী হিসাবে গড়ে তোলার নিমিত্তে তথ্যপ্রযুক্তি/সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাস/জঙ্গি দমন, মানবপাচার ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন কোর্স ও কর্মশালার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডিএমপি’র নিজস্ব ল্যাবে প্রতিমাসে কনস্টেবল থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও নেটওয়ার্কিং-এর উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনঃ ঢাকা মহানগর এলাকায় বসবাসকারী সম্মানিত নারী নাগরিকদের সার্বিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে তিনি উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করেন। নারী কর্মকর্তা ও সদস্যদের সমন্বয়ে পরিচালিত উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন সুবিধাবঞ্চিত ও নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের আবাসন, আইনী সহায়তা, কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করে। সমাজের এই নিগৃহীত অসহায় মানুষগুলোর একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার।
Help Desk: ঢাকা মহানগরকে একটি নিরপরাধ ও সহনীয় অপরাধমুক্ত নগরীতে পরিণত করা এবং জনগণের নিকট সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে তিনি Help Desk গঠন করে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি, টেলিফোনে চাঁদা দাবি, টেলিফোনে হয়রানি ও প্রতারণা, টেলিফোনে হুমকি প্রদান, ইন্টারনেটে হয়রানি ও প্রতারণা, নিখোঁজ ব্যক্তির অনুসন্ধান ও প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে নাগরিকগণ Help Desk এর মাধ্যমে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন যা সর্বমহলে বিশেষভাবে প্রশসংতি হয়েছে।
মিডিয়া সেলঃ তার তত্বাবধানে ও কার্যকরী পদক্ষেপের কারণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের সফলতা, উদ্ধার, জনসম্পৃক্ততামূলক, সাংগঠনিক, কল্যাণমূলক গৃহীত পদক্ষেপ নিয়মিত তুলে ধরার পাশাপশি জননিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্র্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে। অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকরা ইন্টারনেট যুক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই সংবাদ আদান প্রদান করতে সক্ষম। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল সংবাদ, আপডেট, সেবার খাত ও গ্রহণের উপায়, পুলিশের বিভিন্ন শাখা সম্পর্কে সঠিক নির্দেশনার জন্য ডিএমপি ওয়েবসাইট www.dmp.gov.bd যুগান্তকারী অবদান রাখছে।
পুলিশ সম্পর্কে নানা নেতিবাচক ধারণা, বিভ্রান্তি ও গুজবের অবসান ঘটিয়ে জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি ও জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে www.dmpnews.org নিউজ পোর্টালটি। সকল ধরণের সংবাদ যেমন- জাতীয়, পুলিশ, অপরাধ, অর্থনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রেসবক্স, যোগাযোগ প্রচারের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ডিএমপি নিউজের পাঠকসংখ্যা প্রায় ২৮ কোটি। বিভিন্ন বিষয়ে হালনাগাদ সংবাদ প্রচারে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখছে ডিএমপি নিউজ পোর্টাল। ডিএমপি নিউজ (dmpnews.org) নামক অনলাইন নিউজ পোর্টালটি ডিএমপি’র দৈনন্দিন কার্যক্রমের দর্পণ হয়ে উঠেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ইতোমধ্যে ভেরিফাইড হয়েছে। ডিএমপি’র ফেসবুক পেইজে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যক্রমের সচিত্র প্রতিবেদন, উদ্ধারজনিত সাফল্য, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তি, হারানো বিজ্ঞপ্তি, প্রাপ্তি সংবাদ প্রচার করা হয়। এ পেইজে ব্যবহারকারীরা তাদের মতামত, পরামর্শ ও সমস্যার কথা ফেসবুকে জানান। পুলিশের কার্যক্রমে জনমতের প্রতিফলন ও পুলিশি সেবার বিস্তৃতি ঘটাতে Dhaka Metropolitan Police-DMP ফেসবুক পেইজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ডিএমপি ফেইসবুক (Dhaka Metropolitan Police-DMP) পেইজ নাগরিকদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, নাগরিকদের নিরাপত্তা টিপস্ প্রদান, ডিএমপি’র সফলতা সম্পর্কে অবহিত করা এবং নাগরিকদের সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে অবগত হওয়ার একটি জনপ্রিয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ডিএমপি ফেসবুক পেজের লাইক সংখ্যা ৪,২৯,৪৩৮টি এবং ফলোয়ার ৪,৩৯,৩৭৫ জন। “জননিরাপত্তা বিধানে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি” শীর্ষক facebook live এর মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনার নাগরিকদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করেছেন। ডিএমপি’র মিডিয়া সেলের এ সকল যুগান্তকারী পদক্ষেপ তার ঐকান্তিক আগ্রহের কারণে সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।
মিডিয়া কর্মশালা আয়োজনঃ ২০১৬ সালে এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘জননিরাপত্তা বিধানে পুলিশ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এ কর্মশালা ছিলো তার সুদূরপ্রসারী কর্মচিন্তার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। উক্ত কর্মশালায় জননিরাপত্তা বিধানে গণমাধ্যমকর্মী এবং পুলিশ সদস্যদের কার্যকর মেলবন্ধন রচনার প্রেক্ষাপট নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করার জন্য বিষয়ভিত্তিক এজেন্ডা প্রণীত হয়। পুলিশের যে কোন ধরণের আইনসিদ্ধ কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদের ইতিবাচক মানসিকতা তৈরীতে এ কর্মশালা একটি অনন্য ভূমিকা পালন করে।
কল্যাণমূলক কার্যক্রমঃ তার প্রত্যক্ষ তত্বাবধান ও নির্দেশনায় ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরত সকল স্তরের সদস্যগণের জন্য নানামূখী কল্যাণমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সদস্যদের কল্যাণে সমধিক গুরুত্ব প্রদানপূর্বক ওয়ানস্টপ পেনশন সার্ভিস সেল-এর মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন সুবিধা প্রদান, নিহত পুলিশ সদস্যদের মরদেহ ডিএমপিতে নবসংযোজিত ফ্রিজার ভ্যানের মাধ্যমে নিজ ঠিকানায় প্রেরণ, গুরুতর আহত এবং আহত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য মানসম্মত হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে। পুলিশ শপিং মলের উন্নয়ন, বিশুদ্ধ দুধ সরবরাহের জন্য মেট্রো ডেইরী এবং বেকারী সামগ্রী সরবরাহের জন্য মেট্রো বেকার্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হলে কল্যাণ তহবিল হতে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।
সামাজিক কর্মকান্ডঃ জনসাধারণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা ছিলো তার জনকল্যাণমূলক ভাবনার একটি ফসল। শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, ব্লাড ব্যাংক হতে সহায়তা, এতিম ও দুঃস্থদের সাথে ইফতার আয়োজন, দুঃস্থদের আর্থিক সহায়তা, বৃক্ষরোপণসহ নানাবিধ সামাজিক উন্নয়ন ও সচেতনতামূলক কর্মসূচী অব্যাহতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
ধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলনঃ ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আন্তঃধর্মীয় সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পুলিশ। বিভিন্ন ধর্মের নেতৃবৃন্দের সরাসরি অংশগ্রহণে কাংখিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। ঢাকা মহানগর এলাকায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচী নির্বিঘ্নে ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হয় তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও দিক-নির্দেশনার ফলে।
ডিএমপি শিক্ষাবৃত্তি প্রদানঃ একটি আধুনিক ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বিনির্মাণে টেশসই গণতন্ত্র এবং শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কোন বিকল্প নেই। এরই অংশ হিসেবে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত, নিরবচ্ছিন্ন এবং ধারাবাহিকভাবে চলমান রাখার জন্য ২০১৭ সালে মেধা, উচ্চশিক্ষা এবং শিক্ষা সহায়ক “ডিএমপি শিক্ষাবৃত্তি” প্রচলন করেন। ২০১৮ সালে ২য় বারের মতো ডিএমপি, ঢাকায় কর্মরত সকল পুলিশ/সিভিল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের মধ্য থেকে মনোনীত ৮৫০ জনকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫৫ লক্ষ টাকা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। ২০১৯ সালে ৯৭২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৪ লক্ষ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ কার্যক্রমকে অব্যাহত এবং টেকসই করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
দায়িত্ব পালনে পেশাদারিত্বের চরম উৎকর্ষতাঃ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে পেশাদারিত্বের চরম উৎকর্ষতা সাধনের লক্ষ্যে তিনি সর্বদা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০১৮ সালে ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা ও নগরবাসীর জানমাল রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ০৩ জন সদস্য আত্মাহুতি দিয়েছেন, ৪৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের কর্মকান্ডের সঙ্গে মিশে আছে নিরবচ্ছিন্ন দেশপ্রেম এবং মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম(বার), পিপিএম, কমিশনার, ডিএমপি’র প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও গতিমীল নেতৃত্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি টিমে রূপান্তরের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীতে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতির পাশাপাশি জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জনমানসে স্বস্তির পাশাপাশি দেশের অব্যাহত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে বিদেশীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন। সীমিত জনবল, যানবাহন, যন্ত্রপাতি ও লজিস্টিকস সত্ত্বেও শান্তি ও শপথে বলীয়ান হয়ে নগরবাসীকে নিরাপদে ও শান্তিতে রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতায় ভাস্বর। থানা পর্যায়ে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে থানা ব্যবস্থাপনা তদারকি নিবিড় করা হয়েছে। বিট পুলিশিং-এর মাধ্যমে নাগরিকদের সাথে প্রত্যক্ষ এবং কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সফলতম ও ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নাগরিক জীবনকে সংঘাতহীন, নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৪ হাজারেরও বেশি সদস্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দমন ও উদঘাটনে বদ্ধপরিকর।
তার গতিশীল নেতৃত্বে সম্মানিত নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় এবং নিরবচ্ছিন্ন শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশ গড়ে তুলতে শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে। এই শহরের নিশ্ছিদ্র আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখাই ছিলো তার প্রাত্যহিক প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল স্তরের সদস্যদের নিয়ে তিনি নিরন্তর সংগ্রাম ও পরিশ্রম করেছেন। জননিরাপত্তা বিধানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযাত্রায় তার সুযোগ্য পৃষ্ঠপোষকতা এবং সময়োপযোগী সুপরামর্শ, নির্দেশনা ও প্রণোদনা ছিলো অগ্রগণ্য। সীমিত জনবল, যানবাহন, লজিস্টিকস সত্ত্বেও নগরবাসীকে নিরাপদে রাখতে তার এ উদ্যোগ স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতায় ভাস্বর।
৭ আগস্ট, ২০১৯