কাশ্মীর ‘জয়’ করতে হলে, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে হবে। কলকাতা-দিল্লি-বেঙ্গালুরুর নাম করে, শহরগুলিতে হামলার হুমকি দিল জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা এর আগেও বিভিন্ন শহরের নামে হুমকি থাকলেও এবারই প্রথম কলকাতার নাম নিল আল কায়দা।
কিন্তু, ‘কাশ্মীর জয়’-এর সঙ্গে এই শহরগুলোর সম্পর্ক কী? মঙ্গলবার রাতে অনলাইন জিহাদি মঞ্চে একটি ভিডিও প্রকাশ করে সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছে এ দেশে আল কায়দার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা উসামা মেহমুদ। কলকাতার আনন্দবাজার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, দিল্লির মতো বড় শহরে জঙ্গি হামলা এর আগে একাধিক বার হয়েছে। কিন্তু, ২০০২ সালে আমেরিকান সেন্টারে হামলা ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনও বড়সড় হামলা কলকাতায় হয়নি। কিন্তু, সেই কলকাতার নাম এ বার আল কায়দার মুখে! যদিও গোয়েন্দারা বলছেন, আগে কলকাতার নাম স্পষ্ট ভাবে না করলেও পূর্ব ভারতের কথা আল কায়দার মুখে শোনা গিয়েছে। তাঁদের দাবি, আল কায়দা প্রথম যখন ভারত আক্রমণের হুমকি দিয়েছিল তখন পশ্চিম ভারতের পাশাপাশি পূর্ব ভারতকেও ‘টার্গেট’ করে। দু’দিক থেকে আক্রমণ শানালে ভারত বিপর্যস্ত হয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। তবে, এ বারের মতো সেই সময় কলকাতার নাম সরাসরি উচ্চারণ করেনি তারা।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপমহাদেশের মাটিতে জিহাদি আন্দোলনের বীজ বুনতে এ শহর এখন জঙ্গি সংগঠনের নজরে। কলকাতা-সহ অন্য শহরগুলো কেন আল কায়দার মুখে উঠে আসছে? মেহমুদের ভিডিওতেই সেই জবাব মিলছে। তার মন্তব্য, “উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন জোরদার করার প্রয়োজন এসেছে। পাশাপাশি, কাশ্মীরের মানুষের পাশে গোটা অঞ্চলের সকল মুসলমানের দাঁড়ানো উচিত।”
সাক্ষাৎকার ভিত্তিক ওই ভিডিওতে কাশ্মীরে নিজেদের কৌশল নিয়েও কথা বলেছে মেহমুদ। তার দাবি, বহু মুজাহিদিন কাশ্মীরের জন্য পাকিস্তানে চলে গিয়েছে। এখনও যাচ্ছে। এ বিষয়ে পাক সেনার ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করে সে। পাক সেনার জন্যই নাকি মুজাহিদিনরা নিজেদের কাজকর্ম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সে ২০১২-য় পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি শেখ আহসান আজিজের উপর ড্রোন হামলার উল্লেখও করেছে। তবে, পাকিস্তানের মদতেই যে কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গিদের ‘বাড়বাড়ন্ত’ তা-ও শোনা গিয়েছে মেহমুদের মুখে। মেহমুদের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান হবে না। তার কথায়, “যে সমাধানসূত্রে কোনও রক্ত-ঘাম ঝরে না, জিহাদ নেই, মৃত্যু নেই, ক্ষমতার কেন্দ্রে কোনও পরিবর্তন নেই— সেটা শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ এক অস্থায়ী চেষ্টা মাত্র।