ডিএমপি নিউজঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এ সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো এমরান হোসেন ও আহম্মেদ উল্লাহ ফয়সাল। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ভুয়া নিয়োগপত্রের ফটোকপি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় লেখা সম্বলিত প্যাডে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার রশিদ ও সিল (Ministry of Health) উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২ এপ্রিল ২০২২) বিকাল ৫টায় বাংলা মোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টার ও ফার্মগেট এলাকা থেকে এমরান ও ফয়সালকে গ্রেফতার করে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল ইসলাম ডিএমপি নিউজকে বলেন, ভিকটিম সাদিয়া আক্তার “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে” সিনিয়র স্টাফ নার্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসে প্রতারক চক্রের এমরান হোসেনের সাথে পরিচয় হয়। এমরান হোসেন তার নিজের নাম ইমন হোসেন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজি বিভাগে কর্মরত বলে জানান। সে সাদিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ পাইয়ে দিতে পারবেন বলে জানান। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে প্রলুব্ধ হয়ে প্রতারক চক্রের হোতা এমরান হোসেনকে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেন। অতঃপর প্রতারক এমরান হোসেন ভিকটিম সাদিয়াকে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। ভিকটিম সাদিয়া নিয়োগপত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের উদ্দেশ্যে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্রটি ভুয়া বলে জানায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহবাগ থানায় মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
তিনি আরো বলেন, মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। অতঃপর বাংলা মোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টার ও ফার্মগেট এলাকা থেকে এমরান ও ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতারকদের অপরাধের মোটিভ সম্পর্কে ডিবি এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রতারক চক্রটি প্রথমে সাধারণ চাকুরি প্রত্যাশীদেরকে টার্গেট করে। এরপর টার্গেটকৃত চাকুরি প্রত্যাশীকে চাকরি পাইয়ে দেবার প্রলোভন দেখায়। পরবর্তী সময়ে তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে বিশ্বস্ততা অর্জন করে। সাধারণ চাকুরি প্রত্যাশিরা প্রতারকদের কৌশল বুঝতে না পেরে তাদের ফাঁদে পা দেয়। প্রতারক চক্র প্রার্থীর কাছ থেকে চুক্তির এক অংশ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রস্তুত করে কৌশলে চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রার্থীকে নির্দিষ্ট দিন তারিখে নিয়োগপত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে বলে এবং চাকরিপ্রার্থীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
প্রতারক চক্রের সহযোগী অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং গ্রেফতারকৃতদের সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রাশেদ, পিপিএম এর নির্দেশনায় অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান, বিপিএম এর তত্ত্বাবধানে অর্গানাইজ্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।