ভারতের এক সিনিয়র সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে ব্যাঙ্গালুরুতে তাঁর বাড়ির সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ব্যাপারে ব্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার জানিয়েছেন, “মঙ্গলবার রাতে যখন তিনি বাড়ি ফিরছিলেন, তখন বাড়ির ঠিক সামনেই গুলি চালানো হয়। ঠিক কী কারণে এই হামলা হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। “
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “গৌরী যখন বাড়ির দরজা খুলছিলেন, ঠিক সেই সময়ই বুকে সরাসরি দুটো আর মাথায় একটা গুলি করা হয়। “
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে গৌরী লঙ্কেশের হত্যার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে আরও দুই যুক্তিবাদী ও হিন্দুত্ববাদবিরোধী লেখক এম এম কালবুর্গি ও ড. পানসারির হত্যার ঘটনার। তার মতাদর্শের সঙ্গে ওই দুই যুক্তিবাদীর মতামতের সম্পূর্ণ মিল ছিল।
এ ব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে মতামত জানাতে শুরু করেছেন বিশিষ্টজনরা। কবি জাভেদ আখতার লিখেছেন, “দাভোলকর, পানসারে, কালবুর্গি এবং এখন গৌরী লঙ্কেশ। যদি পর পর একই ধরনের মানুষ নিহত হতে থাকেন, তাহলে হত্যাকারীরা কারা?”
অভিনেত্রী রেণুকা সাহানে টুইট করেছেন।
তিনি লেখেন, “আরেকজন যুক্তিবাদী কণ্ঠ রোধ করে দেওয়া হলো, আততায়ীদের চিহ্নিত করা যায়নি। গৌরী লঙ্কেশ, দাভোলকর, কালবুর্গি, পানসারে- কারা মারল এদের সবাইকে?”
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা এ হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন, এই হত্যা মেনে নেওয়া যায় না। নাগরিক সমাজের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে এটা দেখে যে একজন নারীকে এইভাবে হত্যা করা হলো। আমি রাজ্য সরকারের কাছে আরজি জানাচ্ছি যাতে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করতে কোনো চেষ্টার ত্রুটি না রাখা হয়।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ তাঁর পত্রিকা ‘লঙ্কেশ পত্রিকা’ এর মাধ্যমে ‘কমিউনাল হারমনি ফোরাম’ নামে একটি গোষ্ঠীকে ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে গেছেন, যেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বপক্ষে এবং দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদের বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করা হয়। এমনকি তাঁর পত্রিকায় ২০০৮ সালে ছাপা কয়েকটি লেখার জন্য মানহানির মামলাও করেছিলেন বিজেপির সংসদ সদস্য প্রহ্লাদ যোশী।